ঢাকায় আশঙ্কাজনকভাবে শব্দদূষণ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত শব্দে কানের ভেতরের বিশেষ এক ধরনের কোষ ধ্বংস হয়ে যায়। অধিকাংশ মানুষ দীর্ঘদিন রাজধানীতে বসবাস করলে ধীরে ধীরে কানে কম শোনার সমস্যা এমনকি বধির হয়ে যেতে পারেন।
শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী ঢাকার জন্য দিনের বেলায় শব্দের আদর্শমান (সর্বোচ্চ সীমা) ৬০ ডেসিবেল। কিন্তু ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় শব্দের তীব্রতা মানমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। নগরের বিভিন্ন স্থানে শব্দের মানমাত্রা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রায় ১ দশমিক ৩ থেকে ২ গুণ বেশি শব্দ হচ্ছে। যানবাহনের সংখ্যা দিনদিন বাড়ায় শব্দদূষণের মাত্রাও বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে হাইড্রোলিক হর্ন। সাধারণ হর্নের সঙ্গে হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় শব্দদূষণের মাত্রা অনেক বেড়েছে। শব্দদূষণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, শব্দদূষণ বন্ধ করতে সরকারকে একসঙ্গে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আইন আছে, কিন্তু আইনের কঠোর প্রয়োগ নেই। সব মিলিয়ে সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অটোলারিঙ্গোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবুল হাসনাত জোয়ার্দার বলেন, শব্দদূষণ দুভাবে আমাদের কানে প্রভাব ফেলছে। শব্দদূষণ সরাসরি বধিরতা সৃষ্টি করে, কানে শোনার ক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। প্রথমে হয়তো দেখা যায়—কনসার্টের মতো জায়গায় গেলে সমস্যা দেখা দেয়, আবার বিশ্রাম দিলে ঠিক হয়ে যায়। এরকম দুই-একবার হলে আর ভালো হয় না। আবার সড়কের পাশে যারা কাজ করেন, তাদের ক্ষেত্রে শব্দদূষণের প্রভাব মারাত্মক। এদের ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে বধিরতা বাড়ছে। উচ্চমাত্রার শব্দের মধ্যে কয়েক বছর ধরে কাজ করলে তার মধ্যে বধিরতা দেখা দেয়।