আজ রোববার (৫ মার্চ) সকাল থেকেই উত্তেজনায় কাঁপছে লাহোর-সহ গোটা পাকিস্তান। ইসলামাবাদ পুলিশ লাহোর পৌঁছে গিয়েছে। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতারি এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু নেতার গ্রেফতারি ঠেকাতে মরিয়া ইমরানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) কর্মীরা। জামান পার্কের বাড়ির সামনে হাজির হাজার হাজার ইমরান সমর্থক স্লোগান তুলছেন, আগে আমাদের ধরো। তার পর নেতার কথা ভেবো।
ইমরানের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে পাওয়া উপহার সরকারি ভান্ডার বা তোষাখানায় জমা না দিয়ে, মোটা দামে বিক্রি করে দিয়েছেন। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এই কারণেই। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইমরান গেলো অক্টোবরে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানালেও তা খারিজ হয়ে যায়। তার পর থেকে এই মামলার একাধিক শুনানিতেও গরহাজির থেকেছেন ৭০ বছর বয়সি পিটিআই নেতা। সেই সুবাদে এ বার ফরমান নিয়ে ইসলামাবাদের পুলিশ পৌঁছে গেল লাহোরের জামান পার্কের দোরগোড়ায়। ইসলামাবাদ পুলিশ টুইট করে জানিয়েছে, লাহোর পুলিশের সঙ্গে একযোগে তাঁরা অভিযানে নেমেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁরা জামান পার্কের সদর দরজা পেরিয়ে ভিতরে ঢুকতে পারেননি। কারণ পিটিআই নেতা ফওয়াদ চৌধুরির ডাকে জামান পার্কের আশপাশে ভিড় করেছেন ইমরান অনুগামীরা। তাঁরা নাছোড়, ইমরানকে এ ভাবে ‘অন্যায় ভাবে’ গ্রেফতার করা যাবে না। পুলিশ ইমরানের বাড়িতে প্রবেশ করতে গেলেই রাস্তায় শুয়ে পড়ছেন তাঁর সমর্থকেরা।
দায়রা আদালতের এক বিচারক ইমরানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছেন। সেই ফরমান হাতে নিয়েই রবিবার লাহোর পৌঁছায় ইসলামাবাদ পুলিশের একটি দল। তাদের সহায়তা করে লাহোর পুলিশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইমরানের ধারেরকাছেও পৌঁছাতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতারির পথে যাঁরা বাধা তৈরি করবেন, আইন অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদিও পুলিশের হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব না দিয়ে পথে নেমে প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিটিআই। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহের দাবি, ইমরানের গ্রেফতারির সিদ্ধান্ত আদালতের। সরকারের এ ব্যাপারে কিছুই করার নেই।
ইসলামাবাদ পুলিশের দাবি, তাঁদের প্রতিনিধি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক আধিকারিক জামান পার্কে ইমরানের বাড়ির ভিতরে ঢুকেছেন। কিন্তু তাঁকে যে ঘরে বসতে দেয়া হয়েছে সেখানে ইমরানের দেখা মেলেনি। অন্য দিকে বেলা যত গড়াচ্ছে জামান পার্কে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইমরান অনুগামীর সংখ্যা। এত প্রতিবাদ সামলে শেষ পর্যন্ত ইমরানকে রবিবার আদৌ গ্রেফতার করা যাবে কি না তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে।