পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউইতে ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডির আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ৯৯ জনের। সোমবার (১৩ মার্চ) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে এবং এর জেরে ৯৯ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মালাউইর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার চার্লস কালেম্বা।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএন’র এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার্লস কালেম্বার মতে, মালাউইয়ের বাণিজ্যিক রাজধানী ব্লানটায়ারে বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় তিনি সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমরা প্রায় সাতটি কাউন্সিলে ৯৯ জনের মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করেছি। এর মধ্যে ব্লানটায়ার শহরে সবচেয়ে বেশি ৮৫ জন মারা গেছেন এবং এই এক শহরেই প্রায় ১৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’
এছাড়া নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সিএনএন বলছে, মালাউইয়ের সরকার দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ‘দুর্যোগময় অবস্থা’ ঘোষণা করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট লাজারাস চাকভেরা ‘ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডি মালাউইয়ের দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ জেলায় যে ধ্বংসলীলা সৃষ্টি করেছে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন বলে সরকারি একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার ইতোমধ্যেই জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়া দিচ্ছে, সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় জরুরি সহায়তা প্রদান করছে এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারের জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে।’
মালাউইয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয় গেলো রোববার (১২ মার্চ) এক বিবৃতিতে বলেছে, ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডির আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি জেলায় বুধবার পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে।
এর আগে সোমবার মালাউই পুলিশের মুখপাত্র পিটার কালায়া সিএনএনকে বলেন, ঝড়ের কারণে রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে ব্ল্যাকআউট শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার চার্লস কালেম্বা বলেছেন, উদ্ধার প্রচেষ্টা ‘কঠিন’ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে এখনও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা এখন ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা এবং পাহাড় বেয়ে পাথর গড়িয়ে পড়ার মতো অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার তৎপরতা চালানো সহজ নয়। আমাদের কিছু জায়গায় গিয়ে মানুষকে উদ্ধার করতে হবে, সেখানে যাওয়া সহজ নয়। এটা বেশ কঠিন, কিন্তু আমরা নিশ্চিত করছি যে, আমাদের যে কাজটি করা দরকার তা আমরা করছি।’
উল্লেখ্য, মালাউই তার ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক কলেরা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় লড়াই করছে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডির জেরে ভারী বৃষ্টিপাত ও সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির কারণে পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটির পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুনসাইক্লোন | ফ্রেডির | আঘাতে | মালাউইতে | নিহত | ৯৯