আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

মুখে মোবাইল গুঁজে আদিবাসী বধূকে গণধর্ষণ

মুখে মোবাইল গুঁজে আদিবাসী বধূকে গণধর্ষণ
আত্মীয়ের বিয়েতে গিয়ে বর্বরোচিত কায়দায় গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক আদিবাসী বধূ। স্বামী চলাফেরা করতে অক্ষম, তাই তাকে বাড়িতে রেখে এক আত্মীয়ের বিয়েতে গিয়েছিলেন তিনি। আর সেখানেই ঘটে এ ঘটনা। মৃত্যুর আগে অবশ্য জানিয়ে গেছেন এ ঘটনা কিভাবে ঘটেছে ও কারা জড়িত ছিল। গেলো সোমবার (১৩ মার্চ) ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর মহকুমায়। গুরুতর আহত অবস্থায় নির্যাতিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শুক্রবার (১৭ মার্চ) তিনি মারা যান। পরিবারের লোকদের অভিযোগ, চল্লিশ বছরের মহিলাকে ভুট্টা খেতে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। এ সময় তার আর্ত চিৎকার আটকাতে প্রথমে মুখে রুমাল দেয়া হয়, এতেও গোঙানি বন্ধ না হওয়ায় মুখে ঢুকিয়ে দেয়া হয় একটি মোবাইল ফোন। এদিকে পুলিশ দাবি করেছে মৃত্যুর পূর্বে নির্যাতিতা অভিযুক্তদের মধ্যে পরিচিত দুইজনের নাম বলেছেন, সেই সঙ্গে আরও কিছু তথ্য তিনি শেয়ার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে এ তথ্য তার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। গণধর্ষণের ঘটনায় দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মহিলার পরিবার। জেলার পুলিশ সুপার রাহুল দে জানান, প্রথমে মারধর, যৌন নিগ্রহের মামলা রুজু করা হয়। পরে গণধর্ষণ এবং খুনের ধারাও যোগ করা হয়। তিনি বলেন, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এদিকে এ ঘটনাটিকে নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক কাঁদা ছোড়াছুড়ি। বামদের দাবি, মূল অভিযুক্ত ক্ষমতাসীন দলের কর্মী। এদিকে তৃণমূল নেতা সন্তু রায় অভিযুক্ত দু’জনকে দলীয় সমর্থক হিসেবে মেনে নিয়ে বলেন, অভিযুক্তেরা আমাদের দলের সমর্থক। খবর পেয়ে অসুস্থ ওই মহিলাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। যদিও ব্লক এবং জেলা তৃণমূলের নেতারা অভিযুক্তদের ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির লোক বলে দাবি করেন। তবে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির উত্তরবঙ্গের সভাপতি এবং আদিবাসী সংগঠন ‘সেঙ্গেল অভিযান’-এর নেতা বিভূতি টুডু বলেছেন, জেলায় দিশম পার্টির সংগঠন নেই। ঘটনায় জড়িতদের চরম শাস্তি চাইছি। পরিবারের সদস্যদের দাবি, সোমবার পাশের একটি গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন মহিলা। এক মহিলা তাকে বিয়েবাড়ি থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যান বলে অভিযোগ। তার পরেই তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করা হয় বলে দাবি। মঙ্গলবার গ্রামের আর এক বাসিন্দার বাড়ি থেকে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে। পরে সেদিনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বুধবার গঙ্গারামপুর থানায় দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার কাকা। পুলিশ বৃহস্পতিবার হাসপাতালে মহিলার জবানবন্দি রেকর্ড করে। যিনি তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি, সেই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এদিকে ঘটনার কথা জানাজানি হলে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে নানা হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে মৃতার পরিবার। এলাকার বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মূল দুই অভিযুক্ত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওই বধূর স্বামীর আক্ষেপ, চলতে-ফিরতে পারি না। কোথায় যাব, কার কাছে বললে বিচার পাব, কিছুই বুঝতে পারছি না! দেহ বালুরঘাট মর্গে আনা হলে নির্যাতিতার ছেলে বলেন, মায়ের এ দশা যারা করল, তাদের ফাঁসি চাই। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মুখে | মোবাইল | গুঁজে | আদিবাসী | বধূকে | গণধর্ষণ