আর্কাইভ থেকে ক্রিকেট

ইতিহাস গড়ে ১০ উইকেটে বাংলাদেশের জয়

ইতিহাস গড়ে ১০ উইকেটে বাংলাদেশের জয়
আইরিশদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ও লিটন কুমার দাস। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়ে ১-০ তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে রেকর্ড ৩৪৯ রানের সংগ্রহ পাওয়ার পরও বৃষ্টির কারণে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় সিরিজ জয়ের আশায় কিছুটা হতাশই হয়েছিল টাইগাররা। তবে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আইরিশদের মাত্র ১০১ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। সহজ জয়ের পথে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই নির্ভার ছিল বাংলাদেশ। যার ছাপ দেখা গেছে তাদের ব্যাটিংয়েও। সিরিজজুড়ে রান খরায় ভুগতে থাকা তামিম ইকবাল এদিন ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন। অপর প্রান্তে লিটন দাসও দুর্দান্ত শুরু করেন। এই ওপেনারও চার হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করেন। দুই ওপেনারের ব্যাটে ৭ ওভারের আগেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। একই গতিতে শতকও পেরোয় টাইগাররা। এমন দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক তামিম। ১৩ ওভার ১ বল খেলে বিনা উইকেটে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ১০১ রানের অবিছিন্ন জুটিতে ৪১ রান এসেছে অধিনায়কের ব্যাট থেকে। আর লিটন অপরাজিত থেকেছেন ৫০ রান করে। প্রসঙ্গত, এর আগে ইনিংস ওপেন করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে দুই আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডোহেনি ও পল স্টার্লিং। পেস বান্ধব কন্ডিশনে যেটুকু বাড়তি সুবিধা নেওয়া যায়, তার সবটুকুই নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ-হাসান মাহমুদরা। শুরু থেকেই আইরিশদের রানের চাকা আটকে রাখলেও উইকেটের দেখা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় পঞ্চম ওভার পর্যন্ত। এই ওভারের তৃতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে রেখে গুড লেন্থে করেছিলেন হাসান, সঙ্গে ছিল বাড়তি পেস আর তাতেই পরাস্ত ডোহেনি। উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ধরা পড়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১ বলে ৮ রান। এরপর নবম ওভারে আক্রমণে ফিরে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন হাসান। এই পেসারকে খেলতে এদিন চোখে রীতিমতো সরষে ফুল দেখেছেন আইরিশ ব্যাটাররা। এবার অফ স্টাম্পের বাইরে চতুর্থ স্টাম্প বরাবর রেখে গুড লেন্থে ফেলেছিলেন হাসান। ইন সুইং করে ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটে খেলতে পারেননি স্টার্লিং, সরাসরি তার প্যাডে আঘাত হানে। তাতে হাসানের আবেদনে সাড়া দিতে খুব একটা সময় নেননি আম্পায়ার। সাজঘরে ফেরার আগে ১২ বলে ৭ রান করেছেন এই অভিজ্ঞ ওপেনার। স্টার্লিং ফেরার দুই বল পর আবারও আঘাত হানেন হাসান। এবার তার শিকার হ্যারি ট্যাক্টর। ওভারের চতুর্থ বলটি ব্যাক অব লেন্থে রেখেছিলেন হাসান, সেখান থেকে ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাট চালিয়েও পুরোপুরি পরাস্ত হন এই ব্যাটার। বল তার পায়ে আঘাত হানলে আবেদন করেন হাসান। কিন্তু আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। ফলে রিভিউ নেন তামিম ইকবাল। আর তখনই আম্পায়ার তার সিদ্ধান্ত বদলে আউট দিতে বাধ্য হন। সাজঘরে ফেরার আগে ৩ বল খেলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি ট্যাক্টর। পরের ওভারে আক্রমণে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদও। ওভারের দ্বিতীয় বলটি খানিকটা শর্ট লেন্থে ফেলে অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বের করে নিয়েছিলেন তাসকিন, সেখানে ফুটওয়ার্ক ছাড়াই জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন অ্যান্ডি বার্লবির্নি। আর তাতে কোনো ভুল করেনি দ্বিতীয় স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ রান করে অধিনায়ক ফিরে গেলে ২৬ রানেই টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারায় আইরিশরা। দলীয় রান ত্রিশ পেরোনোর আগেই টপ অর্ডার ব্যাটারদের হারিয়ে যখন ধুঁকছিল আয়ারল্যান্ড, তখন টাকারকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন কুর্টিস ক্যাম্পার। এই দুইজনের দৃঢ়তায় আইরিশরা আর কোনো উইকেট না হারিয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করে। এরপরের গল্পটা শুধুই বাংলাদেশি পেসারদের। সিলেটে এদিন রীতিমতো রাজত্ব করেছেন তারা।            

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ইতিহাস | গড়ে | ১০ | উইকেটে | বাংলাদেশের | জয়