ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির অন্যতম একটি রমজান মাসের রোজা পালন। মুসলমানদের জন্য যা ফরজ করা হয়েছে। তাই মুসলমানরা মাসটির আগমনের প্রতীক্ষায় থাকে দীর্ঘ ১১টি মাস। শাবান মাসের লাইলাতুল বরাত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরু হয় পবিত্র বরকতময় মাস রমজানের পদধ্বনি।
পবিত্র রমজান তাকওয়া ও সংযম পালনের মাস। ক্ষমা পাওয়ার মাস। এ মাসের ৩টি কাজে রোজাদার আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হয়। আবার এ মর্যাদাই মানুষকে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় করে তোলে।
রোজাদারের বিশেষ তিনটি কাজ হলো-
তাকওয়া অর্জন করা- তাকওয়া অর্জন করা রমজানের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে রোজা পালনের মাধ্যমে এ তাকওয়া অর্জনের কথা বলেছেন এভাবে-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ
‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর; যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৮৩)
তাকওয়া কী?
হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ইবনে কাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘তাকওয়া কী?’ তিনি বললেন, ‘আপনি যদি কাঁটাযুক্ত কোনো পথ দিয়ে হেঁটে যান, তাহলে কীভাবে যাবেন?’ তিনি বললেন, ‘খুবই সতর্কতার সঙ্গে চলব, যাতে শরীরে কাঁটা না ফোটে।’ তিনি বললেন, ‘এটাই তাকওয়া।’ সুতরাং খুবই সতর্কতার সঙ্গে নিজের চোখে, কান, জিহ্বাসহ অন্য সব অঙ্গকে আল্লাহর নাফরমানি থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘তুমি যখন রোজা রাখো, তোমার কান, চক্ষু ও জিহ্বাও যেন রোজা রাখে।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৮৮৫২)
সংযমী হওয়া- ধৈর্যধারণ করতে শেখা; অন্য অর্থে সংযমী হওয়া। ধৈর্য তিন প্রকার—১. সৎকাজ পালনে ধৈর্য ধারণ, ২. অসৎকাজ থেকে বিরত থাকতে ধৈর্য ধারণ, ৩. বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ। রোজার মাধ্যমে তিন প্রকার ধৈর্যের অনুশীলন করে নিজের জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করা।
ক্ষমা চাওয়া- কৃত গুনাহগুলো মাফ করিয়ে নেওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার কাছে জিবরিল আলাইহিস সালাম এসে বললেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান পেল, অথচ তার গুনাহ মাফ হয়নি, সে জাহান্নামে প্রবেশ করুক, আল্লাহ তাকে দূরে ঠেলে দিক। বলুন, আমিন।’ আমি বললাম, ‘আমিন।’ (তারগিব ১৬৭৯)