আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ধামরাইয়ের বাতাসে ধূলিকণা সাথে সড়কে অব্যবস্থাপনা

ধামরাইয়ের বাতাসে ধূলিকণা সাথে সড়কে অব্যবস্থাপনা
  দীর্ঘ তাপদাহ শেষে স্বস্তির বৃষ্টি হলেও। খুব কম পরিমানে বৃষ্টি হওয়ায়! মাটি থেকে ভাপা গরম উপলব্ধি করা যাচ্ছে। আর মহাসড়কে বাতাসে উড়ছে ধূলিকণা। ধামরাইয়ের ১৬টি ইউনিয়ন এলাকায় চলছে মাটি কাটার উৎসব। রাস্তায় বাহির হলেই মাটির ট্রাক ও ইটের ট্রাক। ভূভূ করে দাপটে চলছে। অসহায় দর্শকের মত চলে পথচারিরা। মাঝে মধ্যে ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা। অনেক পথচারিই হয়েছেন স্পষ্টডেট! আবার অনেকেই পঙ্গু হয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছেন। এ ব্যাপারে ধামরাইয়ের পথচারী সালেহা বেগম (৫৫) ও সাখাওয়াত হোসেন (৬০) বলেন, এমনিতেই ভ্যাপশ্যা গরম তার মধ্যে রাস্তায় চলে মাটির ট্রাক। এমন গতিতে এসব ট্রাক চলে যে রাস্তার সকল ধূলা বাতাসে উড়ে সেগুলো নাক কান মূখ দিয়ে দেহে ঢুকে পড়ে। বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের শিকার হই। এবং রাস্তায় ধূলার কারণে কোন দিক দিয়ে কোন গাড়ি যাইতাছে বুঝা যায় না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে এসব কারণেই। পঙ্গু জীবন যাপন করা এক স্কুল শিক্ষক বলেন, পাঠদান দিতে স্কুলে যাওয়ার সময় মাটি বহনকারী ট্রাক, তিন চাকার হুইলার ও সিএনজি ত্রিমুখী সংঘর্ষে পা হারিয়েছি। পঙ্গু জীবন নিয়ে বেঁচে থাকাটা একটি চ্যালেঞ্জ। তবুও বেঁচে থাকার প্রয়োজনে বেঁচে থাকতে হয়। আমিও এই রাস্তার বেহাল দশার শিকার। সারাদিন ঘরে বন্দি থাকতে হয়। জেল খানার মত লাগে। সড়কে শৃঙ্খলা আনা প্রয়োজন। আঞ্চলিক সড়ক গুলোতে যে পরিমানে মাটিবহনকারী যান চলে এতে করে রাস্তায় চলাচল করাটা খুব বেশী ঝুকিপূর্ণ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. খবির উদ্দিন বলেন, বাতাসে ধূলাকণা বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বাতাসের সাথে ধূলাকণা দেহের ভিতরে প্রবেশ করে লাঞ্চ ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি করে। এতে করে শ্বাসকষ্টসহ জটিল রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়। ধূলিকনা শুধু মানুষের নয় গাছের ফলমূলের জন্যও ব্যাপক ক্ষতিকর। নিরাপদ সড়ক চাই ধামরাই শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ নভেম্বর থেকে ২০২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে ৫৮টি। গুরুতর আহত হয়েছে ১৪১ জন ও নিহত হয়েছে ৩০জন। এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাই ধামরাই শাখার সভাপতি এম.নাহিদ মিয়া বলেন, সড়ক খুবই ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা,এখানে শতশত যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে জনসাধারণ কে প্রতিনিয়ত সড়ক ব্যবহার করতে হয় দৈনন্দিন কর্মে। সড়কে দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খল রোধে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। সড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারনের মধ্যে রয়েছে মাটির ট্রাকের অবাদ চলাচল। মাটি গুলো সড়কে পরে থাকে ধীরেধীরে এগুলা রোদ্রের তাপে ধূলো হয়ে উড়ে জনসাধারণের মাঝে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে পাশাপাশি কিন্তু বৃষ্টির মুহুর্তে তা কাদাযুক্ত হয়ে পিচ্ছিল হয়ে যায় আর এতে করে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অনেকে। এছাড়াও সড়কের পাশে সরকারি সম্পত্তি দখল করে গড়ে তুলেছে বালির ব্যবসা। সড়কে বালির স্থর পরে থাকায় সড়কে চলাচলকৃত যাননাহনের চালকের ব্যাপক সমস্যা দেখা যায়। অনেক সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। উক্ত বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মৌখিক এবং লিখিত ভাবে সমস্যা তুলে ধরে জানানো হলেও তেমন আশানুরূপ সাফল্য আসে নাই। গোলরা হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বলেন, আমরা রাস্তায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। মাটিবহনকারী ট্রাক মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কগুলো চলাচল নিষেধ।এরপরও যদি চলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ইতিমধ্যে মাটি বহনকারী ট্রাকের বিরুদ্ধে ৩-৪টা মামলা দিয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ধামরাইয়ের | বাতাসে | ধূলিকণা | সাথে | সড়কে | অব্যবস্থাপনা