আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

রাজশাহী থেকে আমের প্রথম চালান গেলো হংকং ও ইতালি

রাজশাহী থেকে আমের প্রথম চালান গেলো হংকং ও ইতালি
ম্যাংগো ক্যালেন্ডার হিসাবে রাজশাহীতে মধু মাসের আম পাড়া শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজশাহীর ব্যবসায়ী ও চাষিরা প্রথম গাছ থেকে আম পেড়ে বাজারে তুলেছেন। প্রথম দিন আম পাড়ার পরিমাণ অনেক কম। এবার প্রথম দিনই রাজশাহী থেকে ৪৪০ কেজি আমের চালান হংকং ও ইতালিতে পাঠানো হয়েছে। এই আমগুলো বিশেষ ভাবে প্রক্রিয়াজাত করে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে পাঠানো হয়েছে। গাছ থেকে আম পেড়ে প্যাকেজিং করে ঢাকার আদব ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে এই আম পাঠানো হচ্ছে বলে বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানিয়েছেন। বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের আম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক শফিকুল ইসলাম ছানা বলেন, গুটি প্রজাতির আমের প্রথম চালান হংকং ও ইতালি যাচ্ছে। এটি আগাম জাতের আম। খেতেও খুব ভালো ও স্বাদের। এ আম স্থানীয় হিসেবে চাহিদা বেশি। প্রথম হিসেবে ৩০০ কেজি ইতালি এবং ৭০ কেজি পাকা ও ৭০ কেজি কাচা আম হংকং এ রপ্তানি করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা সুপারসপ ইউনিস্মার্ট মার্কেটে আম পাঠানো হয়েছে। পুঠিয়া উপজেলার ভাল্লুকগাছি গ্রামের আম চাষি আবুল হোসেন জানান, তারা প্রথম দিন গুটি জাতের আম পাড়া শুরু করেছেন। সাধারণত এই আমের স্বাদ কম। অনেকটা টক-মিষ্টি স্বাদের। গুটি জাতের এই আম বাজারে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হবে। ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি পড়বে। আর এই আম নতুন ফল হিসেবে খুচরা বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। মূলত আগামী ১৫ মে থেকে উন্নত জাতের আম গোপালভোগ পাড়া শুরু হবে। এরপর এক এক করে খিরশাপাত (হিমসাগর) ও ল্যাংড়াসহ বিভিন্ন নাম ও জাতের আম বাজারে উঠবে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে এ বছরও ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন করা হয়েছে। নির্দিষ্ট এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে হবে। তবে আবহাওয়া জনিত কারণে কোথাও আম আগে পরিপক্ব হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিতের মাধ্যমেও কৃষকরা সেই আম পাড়তে পারবেন। তিনি আরও জানান, রাজশাহীতে এই বছর ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮৬টি আম গাছ রয়েছে। এবার জেলায় ৯৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল। গত বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। এবার বাগান বেড়েছে ১ হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে। এ বছর হেক্টর প্রতি ১৩ দশমিক ২০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে। সব মিলেয়ে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্যের প্রত্যাশা করছেন তারা। এদিকে জাতভেদে গুটি আম গাছ থেকে নামানো শুরু হচ্ছে ৪ মে, গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষ্মণভোগ, লখনা, রাণী পছন্দ ২০ মে, হিমসাগর অর্থাৎ খিরসাপাত ২৫ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ও ফজলি ১৫ জুন, আরশিনা ও বারী-৪ ১০ জুলাই, গৌড়মতি ১৫ জুলাই, ইলামতি ২০ অগাস্ট, কাঠিমন ও বারি-১১ সারা বছর সংগ্রহ করা যাবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন রাজশাহী | আমের | প্রথম | চালান | গেলো | হংকং | ও | ইতালি