রাজধানীর ওয়ারীতে গেলো (২৯ এপ্রিল) রাতে রিকশাচালক রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে রিকশা ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ ছয় ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ। চক্রটি নিয়মিত ছিনতাইয়ের কাজে জড়িত ছিল। বিশেষ করে রাতে যারা রিকশা চালায় তাদেরই টার্গেট করে ছিনতাইকারী চক্রটি, বললেন ডিএমপি’র গোয়েন্দা প্রধান।
সোমবার (৮ মে) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, গেলো ৩০ এপ্রিল কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর শিল্প এলাকার কদমতলী স্টিল মিলস (প্রা.) লি. এর সামনে পাকা রাস্তার ওপর থেকে একটি অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ শনাক্ত হলে মৃতের বাবা মো. রবিউল ইসলাম কদমতলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় কদমতলী থানায় মামলা হয়, মামলা নং-৪৪। মামলাটি গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনাল টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনাল টিম অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুলের নেতৃত্বে একটি দল হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানা ও বরিশাল জেলার কাজিরহাট থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গা এবং ঢাকা শহর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ঘটনায় জড়িত ও মূল পরিকল্পনাকারী মো. বায়েজিদ (২২), মো. রাসেল (২৪), হৃদয় হাওলাদার ওরফে সাইদুর (২৩), হুমায়ুন কবির (৩৫), মো. হৃদয় (১৭) ও মো. সেলিম (৩০) নামে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
ডিএমপি’র গোয়েন্দা প্রধান বলেন, তারা গেলো (২৯ এপ্রিল) রাতে পরিকল্পনা করে ওই রাতে যে রিকশাটিই পাবে সেই ছিনিয়ে নেবে। এজন্য তারা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য হৃদয়কে নাজিরা বাজার পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হৃদয় সিজারের চালিত অটোরিকশাটি ভাড়ায় ডেকে নিয়ে আসে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর শিল্প এলাকায় বসে অপেক্ষায় থাকে বায়েজিদ, রাসেলরা। রিকশাচালক সিজার হোসেন সেখানে পৌঁছামাত্র রিকশাটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা পেয়ে সিজারকে লোহার রড দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে হত্যা করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং স্মার্ট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে পালিয়ে যায়। অটোরিকশাটি নিয়ে তারা চলে যায় কদমতলী চিটাগং রোডে। সেখানে তারা চক্রের সদস্য সেলিমের কাছে মাত্র ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এর আগেও চক্রটি একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। অধিকাংশ সময় চালকের হাত-পা বেঁধে রিকশা ছিনতাই করতো তারা। ওই রাতে বাধা পাওয়ায় রড দিয়ে আঘাত করা হয় রিকশা চালককে। চক্রের আরও এক সদস্য পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান হারুন বলেন, অধিকাংশ ক্লুলেসের ঘটনায় সাক্ষী-প্রমাণ থাকে না। তখন আসামি ধরা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এই ঘটনায় আরও একজন পলাতক আছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটে সাধারণত রাতে। সেজন্য সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। কারণ অধিকাংশ থেকে এই ধরনের ঘটনায় থানায় জিডি কিংবা মামলা করা হয় না। আমার অনুরোধ এমন ঘটনা ঘটলে থানায় অভিযোগ করুন, তাতে আমরা ডিবি পুলিশ তথ্যটি পাবে ও অভিযান অব্যাহত রাখবে।
https://youtu.be/BzrGtbIH1HM