বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। মূলত এটিই আরও ঘণীভূত হয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তীব্র ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কক্সবাজার ও মিয়ানমারের কিয়াকপিউ বন্দরের মাঝ দিয়ে স্থলভাগে ওঠে আসতে পারে। এসময় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ওঠতে পারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি ১১ মে পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
বুধবার (১০ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ পূর্বাভাসে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, এদিন দুপুরেই আগেই নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ হিসেবে রূপ নিতে পারে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে বৃষ্টির কারণে দেশের তাপমাত্রা কমে আসবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি কোন পথে এগোচ্ছে সেদিকে নজর রাখছে আবহাওয়াবিদরা।
মোখার প্রভাবে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমে বুধবার (১০ মে) সকাল থেকে বাতাসের গতিবেগ কিছুটা বেড়েছে। তাই দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে এক নম্বর দূরবর্তী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এদিকে, উপকূলীয় এলাকাগুলোতে নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি।
এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ জন্য পাকা ধান (৮০ শতাংশ), পরিপক্ব আম ও অন্যান্য সংগ্রহ উপযোগী ফসল দ্রুত সংগ্রহ করার নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরাধীন নয়াদিল্লি ভিত্তিক এই কেন্দ্রের আবহাওয়া বিজ্ঞানী আনন্দ কুমার দাশ জানিয়েছেন, বুধবার (১০ মে) রাতে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নেবে, তখন গতি উঠে যাবে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরের দিকে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নেবে ‘মোখা’। তখন ঝড়ের কেন্দ্রে গতি উঠে যাবে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত আর রাতেই এটি রুপ নেবে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে, যখন কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ উঠে যাবে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
শুক্রবার (১২ মে) দুপুরের দিক ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ উঠে যাবে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত, রাতে আরো শক্তি সঞ্চয় হয়ে বাতাসের গতিবেগ উঠে যাবে ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এরপর থেকেই মূলত শক্তি কিছুটা ক্ষয় করতে শুরু করবে ‘মোখা’।
শনিবার (১৩ মে) দুপুরের দিকে ঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ নেমে আসবে ১৬০ কিলোমিটারে, রাতে যা ১৪০ কিলোমিটার হবে। এরপর রোববার (১৪ মে) দুপুরের দিকে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত, যা রাতে নেমে আসবে ৭০ কিলোমিটারে। এদিন দুপুরের দিকেই তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি নিয়ে কক্সবাজার ও কিয়াকপিউ উপকূলে আঘাত হানবে ‘মোখা’।