আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন আজ

আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন আজ
ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ছিলেন আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত, একজন লেখিকা এবং পরিসংখ্যানবিদ। যিনি দ্য লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প নামে পরিচিত। ১৮২০ সালের ১২ মে ইতালির ফ্লোরেন্সে জন্মগ্রহণ করেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। তার বাবা উইলিয়াম এডওয়ার্ড নাইটিঙ্গেল এবং মা ফ্রান্সিস নাইটিঙ্গেল। ছোটবেলা থেকে তার স্বপ্ন ছিল নার্স হওয়া। কিন্তু তখনকার সময়ে নার্সিংকে সম্মানের চোখে দেখা হতো না। এছাড়া তার পিতা-মাতা চাননি ফ্লোরেন্স নার্স হোক। তাই ফ্লোরেন্স বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হন। কারণ নিজ বাড়িতে তার স্বপ্নটি পূরণ করা সম্ভব ছিল না। তার জীবদ্দশায় তিনি ১৮৫৩ সাল থেকে ১৮৫৪ সাল পর্যন্ত লন্ডনের ‘কেয়ার অব সিক জেন্টলওমেন ইনিস্টিটিউটের’ তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৮৫৫ সালে তিনি নার্স প্রশিক্ষণের জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য কাজ শুরু করেন। নিরলস প্রচেষ্টায় ১৮৫৯ সালে তিনি নাইটিঙ্গেল ফান্ডের জন্য সংগ্রহ করেন প্রায় ৪৫ হাজার পাউন্ড। পরবর্তী সময়ে তিনি ভারতবর্ষের গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর গবেষণা চালান। যা ভারতবর্ষে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবদান রাখে। ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নেও তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। ১৮৫৯ সালে তিনি ‘রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটির’ প্রথম সারির সদস্য নির্বাচিত হন। লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে নার্সিংকে সম্পূর্ণ পেশারূপে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ১৮৬০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাইটিঙ্গেল ট্রেনিং স্কুল’ যার বর্তমান নাম ‘ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল স্কুল অব নার্সিং। ডা. এলিজাবেথ ব্ল্যাকওয়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ১৮৬৭ সালে নিউইয়র্কে চালু করেন ‘উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ’। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় নার্সিংয়ের উপর বইও লিখেছেন। ‘নোটস অন নার্সিং’ নামক একটি বই লিখেন। এই বইটি নাইটিঙ্গেল স্কুলসহ অন্যান্য নার্সিং স্কুলে পাঠ্যসূচীর ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের সবচেয়ে বড় অবদান ছিল ক্রিমিয়ার যুদ্ধে। যখন ব্রিটেনে যুদ্ধাহতদের করুণ অবস্থার বিবরণ আসতে থাকে, তখন নাইটিঙ্গেল চিন্তিত হয়ে পড়েন তাদের নিয়ে। ১৮৫৪ সালের ২১ অক্টোবর তিনি ও তার কাছে প্রশিক্ষিত ৩৮ জন সেবিকা, তার আত্মীয় মেই স্মিথ এবং ১৫ ক্যাথোলিক নানসহ অটোম্যান সাম্রাজ্যে যান। সেখানে পৌঁছে যুদ্ধাহত সৈন্যদের সেবা শুশ্রূষা করেন। তিনি অসংখ্য পদক আর উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। ১৮৮৩ সালে রানি ভিক্টোরিয়া তাকে ‘রয়েল রেডক্রস’ পদক প্রদান করেন। প্রথম নারী হিসেবে ‘অর্ডার অব মেরিট’ খেতাব লাভ করেন ১৯০৭ সালে। ১৯০৮ সালে লাভ করেন লন্ডন নগরীর ‘অনারারি ফ্রিডম’ উপাধি। উল্লেখ্য,  ১৯৭৪ সাল থেকে তার জন্মদিন ১২ মে পালিত হয়ে আসছে ‘ইন্টারন্যাশনাল নার্সেস ডে’। যার মধ্যেমে সম্মান জানানো হয় এক নারীকে যিনি তার কর্মের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছেন-নার্সিং একটি পেশা নয় সেবা। ১৯১০ সালের ১৩ আগস্ট লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল।  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আধুনিক | নার্সিং | সেবার | অগ্রদূত | ফ্লোরেন্স | নাইটিঙ্গেলের | জন্মদিন | আজ