আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন তাহের হত্যার ২ আসামি

প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন তাহের হত্যার ২ আসামি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যার দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন দণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর। আজ সোমবার (১৫ মে) রাজশাহী জেলার কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক এস তাহের আহমেদ নিখোঁজ হন। দুদিন পর শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসার বাইরে ম্যানহোলে তার লাশ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় পর ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার হত্যা থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ১৮ মার্চ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তাতে অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী, তাহেরের বাসার তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর, জাহাঙ্গীরের ভাই আবদুস সালাম, তাদের (জাহাঙ্গীর ও আবদুস সালাম) বাবা আজিমুদ্দীন মুন্সী এবং সালামের আত্মীয় নাজমুলকে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর জাহাঙ্গীর, নাজমুল ও সালাম আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছিলেন, মহিউদ্দিন ও সালেহী তাদের কম্পিউটার, টাকা-পয়সা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাহের আহমেদকে হত্যা করার কাজে লাগান। তবে মিয়া মহিউদ্দিন আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন। পরে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, তখনকার সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মহিউদ্দিন পদোন্নতি পেতে বিভাগে আবেদন করেছিলেন। পদোন্নতির ওই কমিটিতে ড. তাহেরও ছিলেন। তিনি মহিউদ্দিনের কয়েকটি প্রতারণা প্রাথমিকভাবে ধরে ফেলেন। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পরে এই সব প্রতারণা প্রমাণিত হয়। সেই অসন্তোষ থেকে মিয়া মহিউদ্দিন এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী তাহেরকে বাসায় হত্যা করে লাশ ম্যানহোলে ঢুকিয়ে রাখা হয়। ৩৯ জনের সাক্ষ্য ও জেরার পর ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর, সালাম ও নাজমুলকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। সালেহী ও আজিমুদ্দিনকে খালাস দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী এরপর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলার নথিপত্র যায় হাই কোর্টে। আপিলের রায়ে মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলেও সালাম ও নাজমুলের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে এরপর আপিল বিভাগে আবেদন করেন আসামিরা। পাশাপাশি যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামির দণ্ড বাড়াতে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। নয় বছর পর তা শুনানির জন্য ওঠে। দুই পক্ষের শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল দুই আবেদনই খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। এরপর গত ২ মার্চ মৃত্যুদণ্ডের দুই আসামিসহ তিনজনের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনও খারিজ হয়ে যায়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন প্রাণভিক্ষা | চেয়েছেন | তাহের | হত্যার | ২ | আসামি