৯৫ বছর বয়সে ইভিএমে প্রথম বারের মতো ভোট দিলেন প্রবীণ ভোটার হাজী আফসার উদ্দিন। ভাতিজা আর নাতনীর সঙ্গে ভোট দিতে সকালেই কেন্দ্রে উপস্থিত হলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টায় গাজীপুর সদর উপজেলা নলজানী ইউনিয়নের বাড়ীয়ালী নলজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে তিনি ভোট দেন। তখন তার সঙ্গে ভাতিজা শফিকুল ইসলাম ও নাতনী সানজিদা আক্তার কনা ছিলেন।
ইভিএমে প্রথম ভোটের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আফসার উদ্দিন বলেন, ‘ইভিএম ভালো। ব্যালটের চেয়ে ইভিএম ভালো।’
ভাতিজা শফিকুল ইসলাম জানান, কাগজে চাচা আফসার উদ্দিনের বয়স ১৯২৮ সালের ২ জানুয়ারি লেখা থাকলেও তার বয়স আমাদের পারিবারিক হিসাবে ১০৫ বছর চলছে। আমাদের বাড়ি নলজানি গ্রামেই। তার চার ছেলে ২ মেয়ে রয়েছেন।
জানা গেছে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪৮০টি কেন্দ্র রয়েছে। সব কটি কেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট নেয়া হচ্ছে। এ নির্বাচনে ৩৩৪ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় নির্বাচনে লড়বেন ৩৩৩ জন প্রার্থী। সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে এই নগরের এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার আছে ১৮ জন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষ্যে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র ও ৩ হাজার ৪৯৭টি ভোটকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। গাজীপুর সিটির ধীরাশ্রম জিকে হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১২০টি কেন্দ্রের, চান্দনা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড স্কুল থেকে ১১৫টি কেন্দ্রের, দারুস সালাম মাদরাসা থেকে ৫৮টি কেন্দ্রের, আজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৬৮টি কেন্দ্রের ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১৯ কেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়েছে। ইভিএম, বুথ কক্ষ নির্মাণের জন্য কাপড়, টিস্যু পেপার, অমোছনীয় কালি, হ্যান্ড সেনিটাইজার, ভোটার তালিকা, ভ্যাসলিন, মখমলের কাপড়, স্ক্রু ড্রাইভার, মাল্টিপ্ল্যাগসহ ৪৬ ধরনের সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য: গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (এসবি) আবুল বাশার মো. আতিকুর রহমান জানান, নির্বাচনে ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, প্রতিটি কেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৯৬০ জন আনসার ব্যাটালিয়ন, প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন করে ৪ হাজার ৮০০ গ্রাম পুলিশ, ৫৭টি ওয়ার্ডে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২০ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন থাকবে।
মেয়র পদে লড়ছেন যারা: আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান। টেবিল ঘড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন এম এম নিয়াজ উদ্দিন। হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন সরকার শাহনূর ইসলাম (রনি সরকার)। ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন মো. হারুন-অর-রশীদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হয়ে হাতপাখা প্রতীকে নির্বাচন করছেন গাজী আতাউর রহমান, জাকের পার্টির সমর্থন নিয়ে গোলাপ ফুল প্রতীকে নির্বাচন করছেন মো. রাজু আহাম্মেদ এরশাদ, গণফ্রন্টের প্রার্থী মাছ প্রতীকে আতিকুল ইসলাম।