ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে আগামী ২৪ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একাডেকিম ও দাফতরিক কার্যক্রম। তবে এই ছুটি শুরুর দুইদিন আগেই অর্থ্যাৎ ২২ জুন থেকে আবাসিক হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করেছে। ওইদিন সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছুটি আগামী ৫ জুলাই শেষ হলেও ৭ জুলাই সকাল ১০টায় হলসমূহ খুলে দেওয়া হবে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভায় হল বন্ধের বিষয়ে চূড়ান্তভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে ক্যাম্পাস ছুটির দুইদিন আগেই হল বন্ধের সিদ্ধান্তে বেশি বিপাকে পড়েছেন দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা গেছে, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী আগামী ২৪ জুন (শনিবার) থেকে ৫ জুলাই (বুধবার) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সেবা ব্যতীত সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ৬ ও ৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার) সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ৮ জুলাই (শনিবার) থেকে পুরোদমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম চলবে।
আবু সাঈদের বাড়ি পঞ্চগড়ে। তিনি বলেন, ঈদের পরিবহনের অন্তত ৮-১০ দিন আগে টিকেট ছাড়ে। একাডেমিক ক্যালেন্ডারে ছুটির তারিখ দেখে আমরা অনেকেই ২৩-২৪ তারিখের টিকেট কেটেছি। ঈদের সময় টিকেট পাওয়া কতটা কষ্টসাধ্য সেটা সবাই জানে। বিশেষ করে আমাদের যাদের দূর-দূরান্তে বাড়ি আমরা এই দুইদিন থাকবো কোথায়? ২৪ জুন থেকে ছুটি শুরু হলে ২২ জুন কেন হল বন্ধ ঘোষণা করা হবে?
দিনাজপুরের মানসি রায় নামে এক ছাত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গে যাদের বাড়ি তাদের বড় একটি অংশ ট্রেনে যাতায়াত করে। আমি বুধবার ট্র্রেনের টিকেট করেছিলাম। ওইদিন টিউটোরিল থাকায় ক্যান্সেল করে শুক্রবার সকালের টিকেট কাটি। তাছাড়া বৃহস্পতিবার সকালের ট্রেন বন্ধ থাকে। রাতের ট্রেনে মেয়েদের যাতায়াত তেমন একটা নিরাপদ না। এজন্য আমি ২৩ তারিখ সকালের ট্রেনের টিকের করেছি। এখন শুনি আগের দিনই হল বন্ধ হবে। এখন হুট করে আমি কোথায় যাবো?
ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, হল বন্ধের আগেই বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ হওয়াটা একবারে অযৌক্তির সিদ্ধান্ত। এটি প্রশাসনের অদূরদর্শী চিন্তার বহিঃপ্রকাশ বলে আমি মনে করি। অন্তত যেদিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ সেদিন থেকে হল বন্ধ হওয়া উচিত।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ২২ তারিখে সকাল ১০টায় হল বন্ধ হবে ৭ তারিখে ১০টায় খুলবে। বৃহপ্সতিবার ও শুক্রবার এমনিতেও বন্ধ। যেহেতু আমরা ২২ তারিখ থেকে বন্ধ পাচ্ছি তাই সেদিন থেকেই হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছুটি আমাদের বেশি হলেই ভালো।
শিক্ষার্থীদের অগ্রীম টিকেট কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে আগে থেকে ভাবার বা মনে করার কোনো সুযোগ নাই। লাল কালি যখন থেকে শুরু তখন থেকই হল বন্ধ হবে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর ঈদ-উল-আযহার ছুটিতেও ছুটির দুইদিন আগেই হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। ওই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে রাতেই ক্যাম্পাস বন্ধের দিন থেকে হল বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একইদিনে রাতে একটি ছাত্রী হলেও বিক্ষোভ করেন ছাত্রীরা। পরে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তারিখ পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির দিন থেকেই হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।