সেন্ট্রাল হসপিটালে আইসিইউ পরিচালনার বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত চলা অবস্থায় এটি চালু করা অন্যায়। এ সময় তিনি চিকিৎসকদের ভুলের কারণে মাহবুবা রহমান আঁখি ও তার সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন শেষে কনফারেন্স রুমে সেন্ট্রাল হসপিটালের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
এদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অবস্টেট্রিক আইসিইউ ১০ শয্যা (গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের ক্রিটিক্যাল পর্যায়ে চিকিৎসার জন্য), পেডিয়াট্রিক আইসিইউ ১০ শয্যা, মেডিসিন আইসিইউ ১৫ শয্যা, ৫০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড, ২০০ আসনের ট্রেনিং কমপ্লেক্স, এইচআইভি/এইডস রোগী ও ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য নবনির্মিত বিভাগ এবং বহির্বিভাগ রোগীদের জন্য অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম (ই-টিকিটিং)।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক গণমাধ্যমে বলেন, আপনারা জানেন ঢাকা মেডিকেলে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এদের মধ্যে নারী-শিশুসহ সব ধরনের রোগীদের এখানে চিকিৎসা করা হয়। আজ অবস্টেট্রিক ও গাইনি ওয়ার্ডে আইসিইউ, বাচ্চাদের জন্য পেডিয়াট্রিক আইসিইউ, মেডিসিন ওয়ার্ডে আইসিইউ উদ্বোধন করা হয়েছে। এতে আমাদের এখানে মুমূর্ষু অবস্থায় যাদের আইসিইউ প্রয়োজন হয় তাদেরকে আমরা সাপোর্ট দিয়ে জীবন বাঁচাতে পারব। আমরা বহির্বিভাগে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য আলাদা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। আমরা ই-টিকিটিংয়ের ব্যবস্থা করেছি, যাতে করে একজন ব্যক্তি অনলাইনে টিকিট কেটে এখানে এসে চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন।
তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান, আমাদের এখানে জনবল সংকট রয়েছে, আশা করি সে সমস্যার সমাধান করা হবে। অন্যদিকে পাঁচ হাজার বেডের হাসপাতালের নির্মাণ কার্যক্রম যাতে দ্রুত শুরু হয় সে বিষয়টিও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জামাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল হাসান মিলন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশিদ আলম প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে হাসপাতালটির ভাইস-চেয়ারম্যান এবং পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এমএ কাশেম সই করা এক অফিস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তক্রমে সেন্ট্রাল হসপিটালের আইসিইউ বিভাগের সব কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হয়েছে। এ বিষয়ে সবাইকে সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
গেলো শুক্রবার (১৬ জুন) সেন্ট্রাল হসপিটালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. মো. দাউদ আদনান এবং উপ-পরিচালক ডা. মঈনুল আহসানের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় হাসপাতালটির আইসিইউ এবং জরুরি সেবার মান সন্তোষজনক না হওয়ায় অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। একই সঙ্গে সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধের নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।