আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

গাইবান্ধায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত দুই লাখ পশু

গাইবান্ধায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত দুই লাখ পশু
ক্ষুদ্র খামারি মোহাব্বত হোসেন সরদার চার বছর ধরে লালন পালন করছেন হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু। যার ওজন দাঁড়িয়ে প্রায় ৩০ মন। তিনি দাম বলছেন ১০ লাখ টাকা। আশা করেছিলেন এই দামে গরুটি বিক্রি করতে পারলে লাভের মুখ দেখবেন। কিন্তু বাজারে নেয়ার পর দাম যা উঠেছে, তা শুনে হতাশ তিনি। লাভের মুখ তো দেখা দুরের কথা লালন পালনের খরচ তুলতেই সংঙ্কায় আছেন। বাজারে তোলার পর গরু দেখতে লোকজন ভিড় করলেও ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। দুই একজন দাম করলেও তা বিক্রি দামের চেয়ে আকাশ পাতাল ব্যবধান। বাজারে ক্রেতাদের দামে বিক্রি করলে কমপক্ষে দুই লাখ টাকা লোকসান গুনতে হবে ক্ষুদ্র এই খামারিকে। গাইবান্ধা সদর উপজেলার নরৎপুর গ্রামের খামারি খাদেমল ইসলাম জুয়েল বলেন, তার খামার বিভিন্ন জাতের ১২০টি গরু আছে। এর মধ্য আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ৮০টি গুরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন। গেলো বছর গুলোতে বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে গরু কিনে নিয়ে যেতেন তার খামার থেকে। কিন্তু ঈদের মাত্র আর কয়েকদিন বাকী আছে। কোন পাইকারই আসেনি গরু কিনতে। এবার এখনও একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, গরুর খাবারের দাম অনেক বেশী। বর্তমান খাবারের দাম অনুযায়ী গরু লালন পালন করাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঈদের সময় গরু গুলো ন্যায্য দামে বিক্রি না করতে পারলে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানান তিনি। খামারি হাসান মিয়া বলেন, প্রায় এক বছর ধরে দুটি দেশি জাতের বকনা বাছুর পুষে বড় করেছেন। আশা করেছিলেন, গরু দুটি ভালো দামে বেচতে পারবেন। কিন্তু গেলো বছরের তুলনায় গরু দুটির দাম এবার অনেক কমে গেছে। ভেবেছিলেন গরু দুটির দাম প্রায় ৩ লাখ টাকা হবে। কিন্তু এবার গরু দুটির দাম ২ লাখ বেশী দাম করছেন না ক্রেতারা। আরেক খামারী মাজাহারুল ইসলাম বলেন, সব জিনিস পত্রের দাম বেশী। গরুর খাবারের দাম গেলো বছরের তুলনায় প্রায় দেড় গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি গরু দুই থেকে তিন বছর পালনের পর গরুর দাম চাইলে ক্রেতারা কিনতে চায় না। এবার ঈদ বাজারের গরুর দাম খুবই খারাপ অবস্থা। পাইকাররা এখনো সেভাবে গরু কিনছেন না। বাইরে থেকেও ক্রেতারা সেভাবে আসছেন না। কাঙ্খিত দামে গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি, জেলা প্রানী সম্পদ দপ্তর থেকে কোন ধরনে সহযোহিতা না করার কথা যোগ করেন তিনি। ন্যায্য মূল্যে খামারীরা গরু বিক্রি করতে না পারলে অনেক খামারী গরু পালনের আগ্রাহ হারিয়ে ফেলবেন বলে জানান তিনি। দেশের অন্যতম বৃহত্তম পশু উৎপাদনকারী জেলা গাইবান্ধা কয়েকটি খামার ও হাট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে খামারি ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ বছর বড় গরুর তুলনায় ছোট ও মাঝারি গরু পালনে বেশি মনযোগী খামারিরা। দাম নিয়ে ক্রেতা আর বিক্রেতার মাঝে পাথক্য দেখা গেছে। রওশন হাবীব ও পরোশ আলীর মতো আরও অনেকে মনে করছেন, বর্তমান চড়া বাজার দরে পশু কিনে কোরবানি দেওয়া তাদের কঠিন হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন গাইবান্ধায় | কোরবানির | জন্য | প্রস্তুত | দুই | লাখ | পশু