আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

এবাদতের পেসের সামনে তালমাতাল কিউই ব্যাটাররা

এবাদতের পেসের সামনে তালমাতাল কিউই ব্যাটাররা

শিরোনাম পড়ে যে কারোর মনটাই খুশি ভরে যাবার কথা। টেস্ট ক্রিকেটে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শক্তঅবস্থানে আছে বাংলাদেশ। যারা কিনা দুই সপ্তাহ আগেও ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভরাডুবি হয়েছে সাদা পোশাকে। সেই বাংলাদেশের কি এমন পরিবর্তন হলো যে, কঠিন কন্ডিশনে গিয়ে তারা একেবারেই বদল গিয়েছে। 

উইল ইয়াং ও রস টেলরের ব্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে যখন বড় সংগ্রহের চিন্তায় স্বাগতিকরা নিউজিল্যান্ড, তখনই টাইগার পেসার এবাদত হোসেনের পেসের রীতিমত কেঁপে উঠলো কিউইদের ব্যাটিং অর্ডার। দুই ওভারের মাঝে উইল ইয়াং, হেনরি নিকোলস ও টম ব্লানডেলকে ফিরিয়ে দিয়ে কিউইদের আবারো পেছনে ঠেলে দিয়েছেন এই পেসার।

টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়েকে দ্রুতই সাজঘরে ফিরিয়ে দেয় বাংলাদেশ। তারপর রস টেলর ও ওপেনার উইল ইয়াংয়ের জুটিতে লিড নেয় কিউইরা। কিন্তু এবাদত বোলিংয়ের একই ওভারে ইয়াং ও হেনরি নিকোলসকে সরাসরি বোল্ড করলে কিউইদের বড় সংগ্রহের পরিকল্পনায় লাগে বিশাল ধাক্কা। এরপরের ওভারে টম ব্লানডেলকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন এবাদত। ডানহাতি এই ফাস্ট বোলারের দারুণ পেসের সঙ্গে উইকেট টেকিং লাইন-লেংথেই বিপদে পড়েছে কিউইরা।

বাংলাদেশের চেয়ে ১৩০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। প্রথম সেশনের শেষ দিকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে তারা। কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দল। বিরতি থেকে ফিরে স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট করছিলেন টম লাথাম ও উইল ইয়ং। তবে ৯ম ওভারে তাসকিনের বল স্ট্যাম্পে টেনে বোল্ড হয়ে ফেরেন লাথাম। 

২৯ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ৩৪ রানের জুটি গড়েন উইল ইয়ং ও ডেভন কনওয়ে। মেহেদি হাসান মিরাজের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান ইয়ং। লিটন দাসের কল্যাণে আরো একবার জীবন পান ইয়ং। তবে সাদমান ইসলামের দুর্দান্ত ক্যাচে প্যাভিলিয়নে ফেরেন কনওয়ে। ১৩ রান করা এই ব্যাটারকে ফেরান এবাদত। 

তৃতীয় উইকেটে অভিজ্ঞ রস টেলর এবং ইয়াং গড়েন ৭৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। তাতে বাংলাদেশের দেয়া ১৩০ রানের লিড টপকে যায় তারা। ৬৯ রান করা ইয়াংকে ফেরান এবাদত। ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক করেন এই ব্যাটার। তার বিদায়ের পরই শুরু হয় এবাদতের পেস গতি। রীতিমত ভেল্কিতে পরে যান কিউই ব্যাটাররা। একই ওভারের পঞ্চম বলে হেনরি নিকোলসকে ফেরান তিনি। টম ব্লান্ডেলও ফেরেন খালি হাতেই। তাতে দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৪৭ রান। 

এর আগে ৬ উইকেটে ৪০১ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেন বাংলাদেশের দুই অপরাজিত ব্যাটার মেহেদি হাসান মিরাজ ও ইয়াসির আলী। দুইবার জীবন পাওয়া মিরাজ করেন ৪৭ রান। ইয়াসির আলী করেন ২৬ রান। ১১ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৫৮ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। তাতে ১৩০ রানের লিড পায় টাইগাররা। কিউইদের হয়ে ৮৫ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। নেইল ওয়াগনার তিনটি টিম সাউদি দুটি ও কাইল জেমিসন নেন এক উইকেট।

দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের চেয়ে ১৭ রানে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:নিউজিল্যান্ড (প্রথম ইনিংস) : ৩২৮/১০ (১০৮.১ ওভার; উইল ইয়ং ৫২, ডেভন কনওয়ে ১২২, রস টেইলর ৩১, হেনরি নিকোলস ৭৫, শরিফুল ইসলাম ৩/৬৯, মেহেদি হাসান মিরাজ ৩/৮৬, মুমিনুল হক ২/৬, এবাদত হোসেন ১/৭৫)।

বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস) : ৪৫৮/১০ (১৭৬.২ ওভার; মাহমুদুল হাসান জয় ৭৮, নাজমুল হোসেন শান্ত ৬৪, মুমিনুল হক ৮৮, লিটন দাস ৮৬, ইয়াসির আলী রাব্বি ২৬, মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৮, নেইল ওয়াগনার ৩/১০১, ট্রেন্ট বোল্ট ৪/৮৫, টিম সাউদি ২/১১৪, কাইল জেমিসন ১/৭৮)। 

নিউজিল্যান্ড (দ্বিতীয় ইনিংস) : ১৪৭/৫ (৬৩ ওভার;  উইল ইয়ং ৬৯, রস টেইলর ৩৭, তাসকিন আহমেদ ১/২২, এবাদত হোসেন ৪/৩৯) 

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন এবাদতের | পেসের | সামনে | তালমাতাল | কিউই | ব্যাটাররা