স্বর্ণ, রুপা ও ডায়মন্ডের অলংকার কেনাবেচা সহজ করার লক্ষ্যে ‘ক্রয়বিক্রয় ও বিপণন নির্দেশিকা-২০২৩’ প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
গেলো (১৩ জুলাই) বৃহস্পতিবার একগুচ্ছ নির্দেশনা দেয় তারা। পাশাপাশি বাজুস সদস্যদের কিছু বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
স্বর্ণ- স্বর্ণ নীতিমালা (২০১৮) ও সংশোধিত নীতিমালা (২০২১) অনুযায়ী স্বর্ণের মান নিশ্চিত করতে হলমার্ক পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বিধান মেনে গহনা বিক্রি, বিপণন, প্রস্তুত ও সরবরাহ করতে হবে। নিম্নমানের অলংকার প্রস্তুত, বিপণন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোনো কারিগর/ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এ ধরনের কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এতে বলা হয়, ক্যাডমিয়াম পাইনের নামে কোনো গহনা প্রস্তুত, বিপণন ও বিক্রি করা যাবে না। জুয়েলারি ব্যবসার সুনাম ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। পাইন ঝালার কোনো অলংকার প্রস্তুত, বিপণন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সনাতন পদ্ধতির অলংকার শুধু ক্রেতাসাধারণের কাছ থেকে কেনা যাবে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, সারাদেশে স্বর্ণের ৪টি মান রয়েছে। সেগুলো হলো ১৮, ২১, ২২ ও ২৪ (৯৯ দশমিক ৫) ক্যারেট। এর বাইরে কোনো অলংকার বিক্রি করা যাবে না।
উল্লেখ্য, তেজাবী স্বর্ণের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতা কোনো অবস্থাতেই ৯৯ দশমিক ৫-এর নিচে গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে সব হলমার্কিং কোম্পানিকে ওই নীতিমালা অনুযায়ী ধাতুটি পরীক্ষা করতে হবে। অলংকারের গায়ে হাতে লেখা ক্যারেট সিল গ্রহণযোগ্য নয়।
স্বর্ণের গহনা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং ক্রেতার কাছ থেকে কেনার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ বাদ দিতে হবে। এছাড়া অলংকার বিক্রির সময় ক্রেতাসাধারণের কাছ থেকে গ্রামপ্রতি কমপক্ষে ৩০০ টাকা মজুরি নিতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান এ সিদ্ধান্ত অমান্য করলে ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে স্বর্ণের অলংকার বিক্রির সময় কোনো ধরনের প্রলোভনমূলক উপহার বা মূল্যছাড়/ মজুরিছাড়/ ভ্যাট-ছাড় দেয়া যাবে না। পুরোনো স্বর্ণ কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিক্রেতাকে ক্রয় রসিদ দিতে হবে।
ব্যাগেজ রুলের আওতায় আনা স্বর্ণ কেনার ক্ষেত্রে বিক্রেতার পাসপোর্টের মূল কপি থেকে ফটোকপি করতে হবে। বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপিরও ফটোকপি রাখতে হবে। প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে নিরাপদ আশ্রয় ধাতুটি কিনতে হবে। এয়ারপোর্টে ডিক্লারেশন/ট্যাক্সের আওতায় থাকলে ট্যাক্স দেয়ার ডকুমেন্ট (মূল কপি) সংরক্ষণ করতে হবে।
ডায়মন্ড - ডায়মন্ডের অলংকার কেনাবেচায় ৫০ সেন্টের ওপরে সব গহনার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সার্টিফিকেট দিতে হবে। এতে স্বর্ণের সর্বনিম্ন মানদণ্ড ১৮ ক্যারেট। ডায়মন্ডের অলংকার বিক্রয়ের সময় বাধ্যতামূলক ক্যাশমেমোতে গুণগত মান নিদের্শক উল্লেখ করতে হবে।
এটি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট দেয়া যাবে। কোনও জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান এ নিয়ম অমান্য করলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে ডায়মন্ড অলংকার বিক্রির সময় কোনও প্রলোভনমূলক উপহার সামগ্রী কিংবা একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি- এ ধরনের অফার দেয়া যাবে না।
রুপা- স্বর্ণের মতো রুপার অলংকারে বাধ্যতামূলক হলমার্ক থাকতে হবে। বিক্রির ক্ষেত্রে ক্যাশমেমোতে অবশ্যই ক্যারেট ও ওজন উল্লেখ থাকতে হবে। রুপার অলংকার এক্সচেঞ্জের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ এবং ক্রেতার কাছ থেকে কেনার ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ বাদ দিতে হবে। ভোক্তা অধিকার ও প্রতারণা রোধে রুপার অলংকারের ডিসপ্লেতে ইমিটেশন/মেটাল/গোল্ড প্লেটকৃত জুয়েলারি রাখা যাবে না।
সারাদেশে রুপার ৪টি মান নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো ১৮, ২১, ২২ (ক্যারেট ক্যাডমিয়াম) ও সনাতন (সনাতনে ১০ আনা জমা থাকতে হবে)। এ মানের বাইরে কোনও অলংকার বিক্রি করা যাবে না।
এএম/