সরকার হেপাটাইটিস ছাড়াও অন্যান্য ঘাতক রোগ ও সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধ এবং চিকিৎসাসেবার উন্নয়নে জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ বিভিন্নমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’। এ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস-২০২৩’ পালন করা হচ্ছে জেনে আনন্দিত। ভাইরাস হেপাটাইটিস প্রতিরোধে দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমরা অপেক্ষা করছি না’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি-২০১১ অনুযায়ী ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা’-কে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি। আমাদের সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের ফলে গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে আমরা স্বাস্থ্যখাতে প্রথম সেক্টর কর্মসূচি গ্রহণ করি। ফলে এমডিজিতে স্বাস্থ্য সংশ্লি¬ষ্ট সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়। আমাদের সরকারের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ শিশু মৃত্যু হার হ্রাসের জন্য এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড ফর ইমপ্রুভিং দ্যা লাইভস অব উইমেন এন্ড চিলড্রেন, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড ফর ডিজিটাল হেলথ ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট পুরস্কার পায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত সাড়ে ১৪ বছরে আমরা ২৩টি নতুন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি। এছাড়া দেশে ৪৭টি বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। আমরা সাধারণ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছি। সাড়ে আঠারো হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসকল পদক্ষেপের ফলে চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে, বেড়েছে দেশের মানুষের গড় আয়ু।’ বিশ্বে হেপাটাইটিস ভাইরাস বহনকারী প্রতি ১০ জনে ৯ জনই জানে না যে, সে হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত। তাই হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্য অর্জনে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পোলিও নির্মূল সার্টিফিকেট অর্জন করেছে। তাছাড়া, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)-এর সফলতার জন্য গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ভ্যাকসিন এন্ড ইমুনাইজেশন (গ্যাভি) আমাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ও দু’বার গ্যাভি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিস নির্মূল এর যে লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে তা আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় অর্জন করা সম্ভব। তিনি হেপাটাইটিস নির্মূলে সরকার গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি দেশের চিকিৎসক সমাজ, বেসরকারি ব্যক্তি, সংস্থা, প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লি¬ষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি হেপাটাইটিস প্রতিরোধে সচেতন হতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথাও বলেন। এছাড়াও ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।