বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক মহলকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। সেখানে বিরোধীদের ওপর নিপীড়নমূলক হামলা চালানো হচ্ছে। এটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ছাড়া বিরোধী নেতা–কর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বুধবার (২ আগস্ট) নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে।
বিবৃতিতে সংস্থাটির এশিয়াবিষয়ক উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর পরিচালিত বর্বরোচিত দমন অভিযানকে নির্বাচন গণতান্ত্রিক না হওয়ার সর্তক সংকেত হিসেবে দেখা উচিত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাইয়ের শেষ দিকে বিরোধীদলীয় সমর্থকদের ওপর বাংলাদেশ পুলিশ নির্বিচার রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে। এ সময় বিরোধী সমর্থকদের পিটুনিও দেয়া হয়েছে। গেলো ২৯ জুলাইয়ের কর্মসূচি ঘিরে কয়েকদিনে কর্তৃপক্ষ বিরোধী দল বিএনপির আট শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এটা দৃশ্যত রাজনৈতিক বিরোধীদের নিশানা করে আটকের চেষ্টা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সভা-সমাবেশের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। তাছাড়া বিক্ষোভ আইনগতভাবে নিষিদ্ধ না হলে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকারের মানদণ্ডও মেনে চলতে হবে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ‘নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে পুলিশকে বলতে হবে—বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধিবিধান মেনে চলতে। পাশাপাশি এটা স্পষ্ট করতে হবে, যারা এ ক্ষেত্রে বিধিবিধান মেনে চলবেন না, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বাংলাদেশ সরকারের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রকাশ্যে জোরালোভাবে বলতে হবে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে গুরুতর অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কঠোর ও সময়োচিত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বাণিজ্য–সুবিধাসহ সহযোগিতার অন্যান্য ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়বে।’
মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলের কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকার বিষয়টি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ভালোভাবে অবগত। তাই, নিবর্তনমূলক গণগ্রেপ্তার ও সহিংস দমনাভিযানের মধ্যদিয়ে বিরোধীদের অকার্যকর করলে বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে মনে করার মতো বোকা কোনো ব্যক্তি নেই।’
এসি/