আর্কাইভ থেকে ইউরোপ

নেকাব নিষিদ্ধের প্রস্তাব নিয়ে সুইজারল্যান্ডে তোলপাড়

নেকাব নিষিদ্ধের প্রস্তাব নিয়ে সুইজারল্যান্ডে তোলপাড়

সুইজারল্যান্ডে নেকাব নিষিদ্ধের প্রস্তাব নিয়ে তোলপাড় চলছে। জনসমাগম স্থানে মুখ ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ করতে গণভোট হবে সাত মার্চ। এ উদ্যোগে ক্ষুব্ধ দেশটির সাধারণ মানুষ। এমন সিদ্ধান্তে সমাজে বিভাজন দেখা দিয়ে উগ্রপন্থা উস্কে দেবে বলছে বিশ্লেষকরা।

নেকাব বিরোধী প্রচারণা চলছে সুইজার‍ল্যান্ডের সব স্থানে। বোরকা বিক্রির অনেক সাইনবোর্ড ঢেকে দেওয়া হয়েছে। জনসমাগম স্থলে পুরো মুখ ঢাকা নিষিদ্ধে ৭ মার্চ গণভোটের ঘোষণার পর থেকেই সরব হয়েছে নেকাব বিরোধীরা।

নেকাব নিষিদ্ধ প্রচারণা কমিটির প্রধান জ্যাঁ লুক অ্যাডার বলেন, বোরকা বা নেকাব ভয়ঙ্কর একটি জিনিস। এটা সভ্যতা বিরোধী একটি অভ্যাস। নেকাব মানুষের মুক্ত চিন্তাধারাকে বাধাগ্রস্ত করে। এটি উস্কে দিতে পারে ধর্মীয় উগ্রপন্থা। তাই সময় থাকতেই এর লাগাম টানতে হবে।

প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে পুরোপুরি মুখ ঢেকে রাখায় নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি কোনো নারীকে জোর করে বোরকা পড়তে বাধ্য করা যাবে না। সুইস সরকারের এমন উদ্যোগের পর থেকেই তোলপাড় চলছে।

স্থানীয়রা বলছে, এমন সময়ে মুখ ঢাকা নিষিদ্ধ করতে গণভোট হচ্ছে যখন সবাই মাস্ক পড়ে আছে। এটা হাস্যকর সিদ্ধান্ত।

আরও এক নারী বলেন, একজন নারী হিসেবে আমার মনে হয়, কে কি পড়বে তা পুরোপুরি তার ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। যার ইচ্ছা হবে নেকাব পড়বে, যার ইচ্ছা হবে না সে পড়বে না।

কোনো ধর্ম উল্লেখ না থাকলেও বিশ্লেষকরা বলছে, মুসলিমরা এই আইনের লক্ষ্য। এতে করে সুইস সমাজ ব্যবস্থার মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে তারা। যা উস্কে দেবে উগ্রপন্থা।

ইউনিভার্সিটি অব লুকার্নের গবেষক আন্দ্রেস জ্যানেত্তি জানান, মুসলিম নারীদের মধ্যে নেকাব বা বোরকা পড়ে প্রায় ২০ শতাংশ। যা মোট সুইস জনগোষ্ঠীর তুলনায় একেবারেই নগণ্য। তাই একে ইস্যু করে বিতর্ক সৃষ্টি করলে নিজেদের শোষিত মনে করবে সুইস মুসলিমরা। এই বিচ্ছিন্নতার পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে।

সুইজারল্যান্ডের অ্যান্টি রেসিজম ফোরামের মুস্তাফা বিয়ঁর বলেন, মুসলিম নারী মানেই নিপীড়নের শিকার এই প্রচারণা দেখতে দেখতে আমরা ক্লান্ত। বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত। নিজের অধিকার নিয়ে সচেতন মুসলিম নারীরা। তারা নিজের ইচ্ছামত সিদ্ধান্ত নেয়। তা পেশার ক্ষেত্রেই হোক কিংবা পোশাকের। বাধ্য হয়ে কেউ নেকাব পড়ে না।

সুইজারল্যান্ডে তিন লাখ ৮০ হাজারের বেশি মুসলমান বাস করে। এটি দেশটির মোট জনসংখ্যার পাঁচ শতাংশ।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন নেকাব | নিষিদ্ধের | প্রস্তাব | নিয়ে | সুইজারল্যান্ডে | তোলপাড়