আর্কাইভ থেকে রাজনীতি

পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্য আওয়ামী লীগ সম্পাদকের মতো: রিজভী

পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্য আওয়ামী লীগ সম্পাদকের মতো: রিজভী
উচ্চপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্য থানা আওয়ামী লীগের সম্পাদকের মতো। বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম রানার মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘গতকাল নাকি উচ্চপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে একজন কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। তার বক্তব্য শোনার পর মনে হয়েছে তিনি কি পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা? নাকি মোহাম্মদপুর, শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। আমি এটার কোনো পার্থক্য করতে পারি নাই।’ রিজভী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটা রাষ্ট্রের বাহিনী। জনগণের টাকায় তাদেরকে বেতন দেয়া হয়। জনগণের টাকায় এরা বাড়ি ভাড়াসহ সব সুযোগ-সুবিধা পায়। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন দলীয় প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বিএনপির কোনো নেতা নন। যখন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা হাসান মাহমুদের ভাষায় কথা বলেন যখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতার ভাষায় কথা বলেন তাহলে আগামী নির্বাচন কী ভয়ংকর নির্বাচন হবে? ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যেতে পারবে না, ভোটাররা যেতে পারবে না, বিরোধী দল অংশগ্রহণ দূরে থাক প্রতিযোগিতাও করতে পারবে না।’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘একতরফা আরও একটি অভিনব নীলনকশার নির্বাচন। সেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার আলামত হচ্ছে গতকাল ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দলীয় বক্তব্য’ তিনি বলেন, ‘এই পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে দিয়ে বলানো হবে গ্রামে যারা ভোট দিতে যাবেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। যারা নির্বাচনী প্রচার করবেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। এভাবেই শেখ হাসিনা আবারও একতরফা নীলনকাশার নির্বাচন করতে চান। কিন্তু এই পরিস্থিতি চলতে দেয়া যায় না। এই পরিস্থিতি আমাদেরকে প্রতিহত করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন,‘গণতন্ত্রের সুবাতাস বইয়ে দিতে হবে। গণতন্ত্রের মুক্তির দিশারী গণতন্ত্রের বাতিঘর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে তা না হলে কারো জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না। যারা শ্লোগান দেন যারা মিছিল করেন যারা সমাবেশ করেন যারা এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন যারা এক দলীয় প্রহসনের নির্বাচনের সমালোচনা করেন তাদেরকে শত্রু মনে করেন শেখ হাসিনা। এই কারণে আজকে মজনু জেলে, নিরব জেলে, মোনায়েম মুন্না জেলে, হাবিব জেলে, গোলাম মওলা শাহীন জেলে, কয়েকবারের এমপি সালাউদ্দিন আহমেদ কারাগারে বন্দি, আজকে মুসাব্বির কারাগারে, অন্য কোনো কারণ নাই।’ বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘কই জুয়াড়ি ক্যাসিনোর মালিকরা তো আজকে কারাগারে নেই? যারা সন্ত্রাস করেছে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারা কেন কারাগারে নেই? কেন বিচার হয় না আবরার হত্যার? আজকে কেন তানভীর আহমেদ রবিনকে এইভাবে ধাওয়া করে তার ওপর একদম ঝাঁপিয়ে পড়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হল। প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে বিএনপির সভা সমাবেশে যে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় যুবলীগের ছাত্রলীগের নেতারা হামলা চালায় কেন তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় না?’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুলিশি অনুমতির কাছে বন্দী। শুধু বিএনপি নয়, বিএনপিসহ সমমাননা দলগুলোর কারো স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ নেই।’ রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র কখনো একসঙ্গে যেতে পারে না। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা আওয়ামী লীগ কখনো শেখেনি। তাদের জন্ম থেকেই তারা গুন্ডা পাণ্ডাদেরকে ভালোবেসেছে। রিজভী আরও বলেন, ‘গোটা বিশ্ব থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কেউ নাই। হয়তো দু-একটা দেশ থাকতে পারে, সেখানে তারা খুব হাতপা ধরছেন, আকুকুতি-মিনতি করছেন, তারা যেমনভাবে চান সেইভাবে ক্ষমতায় যেন তাদেরকে রাখা হয়। এরকমই শোনা যায়। আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী পার্শ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকদেরকে নাকি ২ টন ইলিশ মাছ পাঠিয়েছেন, আমরা জানি না এই ঘটনা কতটুকু সত্য। এরকম জনশ্রুতি আছে।’ জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন পুলিশ | কর্মকর্তাদের | বক্তব্য | আওয়ামী | লীগ | সম্পাদকের | মতো | রিজভী