আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

পঞ্চগড়ে মাধ্যমিক স্কুলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে

পঞ্চগড়ে মাধ্যমিক স্কুলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে
পঞ্চগড়ের একটি বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঁচটি পদের নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে, সেই সঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বেই চুড়ান্ত প্রার্থীদের নাম স্থানীয়দের মুখে মুখে রটে গেছে। নিয়োগ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের বিরূদ্ধে। নাম ফাঁস হওয়ার পর আবেদনকৃত প্রার্থীরা নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আগ্রহ হারাচ্ছে। ঘটনাটি পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাষা ইউনিয়নের সাহেব বাজার এলাকার পাহাড়তলি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচটি পদে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে । পাহাড়তলি উচ্চ বিদ্যালয় সূত্রে জানা, যায় পাঁচটি পদের জন্য গেলো ২৮ মে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক, আয়া, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নিরাপত্তা কর্মী, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে একজন করে নিয়োগ দেয়া হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৫৩ জন চাকুরি প্রার্থী চাকুরির জন্য লিখিত আবেদন করেন। চাকুরিতে আবেদনকৃত প্রার্থীর পরিবার এবং স্কুলের পার্শবর্তি লোকজন সহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে অর্থের বিনিময়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে,  ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নুরু মিঞার ছেলেকে নিরাপত্তা কর্মী, সহকারী শিক্ষক আতিকুর রহমানের স্ত্রীকে ল্যাব অপারেটর পদে, পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে রফাদফা না হওয়ায় ওই পদটিতে পরীক্ষা স্থগিত রাখার পরিকল্পনা করেছেন ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক। বিশেষ করে ল্যাব অপারেটর পদটির প্রার্থী নিয়ে চাঞ্চল্য সৃস্টি হয়েছে। ওই পদে সহকারী শিক্ষক আতিকুরের স্ত্রী আফরিনকে নিয়োগ দেয়া হলে স্কুলের সামনে প্রায় ১০ শতক জমি নগদ আট লাখ টাকা রফাদফা হয়েছে। এই পদে অন্য প্রার্থীরাও ম্যানেজিং কমিটিকে নগদ ১০ থেকে ১২ লাখ পর্যন্ত দিতে আগ্রহী। এদিকে নিরাপত্তা কর্মী পদে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নূরু মিঞার ছেলে আলমগীরের নিয়োগ চুড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। হাড়িভাষা ইউনিয়নের ইয়ারপাড়া এলাকার ল্যাব অপারেটর পদে আবেদন করা ইশা নামে প্রার্থীর বাবা ইউসুফ জানান আসলে এখানে নিয়োগ বাণিজ্য হচ্ছে। ম্যানেজিং কমিটির চারজন সদস্য আমার মেয়ের চাকুরীর জন্য বিশ লাখ টাকার প্রস্তাব দেয় আমি পনের লাখ টাকা দিতে স্বীকার করেছিলাম। এজন্যই আমার মেয়ের চাকুরী হবেনা। তিনি বলেন আয়া পদের জন্য কমিটির সদস্যরা একজন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতি অন্য আরেকজন প্রার্থীকে চাকুরি দেওয়ার জন্য কথা দিয়েছেন। এদিকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে হাবিবুর বিএসসি’র কাছে প্রায় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ম্যানেজিংক কমিটি। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করা কায়েত পাড়া এলাকার আসমা খাতুন জানান চাকরিটা আমার হবেনা, পরীক্ষা দেয়ার আগ্রহ নেই আমার, কারন পূর্ব থেকে কমিটি অন্য একজনের নাম সিলেক্ট করে রেখেছে। পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে আবেদন করা চাকুরি প্রার্থী হুমায়ুন জানান আসলে এখানে নিয়োগ বাণিজ্য হচ্ছে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর আমি চার লাখ টাকা দিতে চেয়েছি কিন্তু প্রধান শিক্ষক রমজান আলীর সঙ্গে কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের কুচিয়ামোড় এলাকার এক প্রার্থীর সাথে সম্পর্ক ভাল থাকায় সে আট লাখ টাকার বিনিময়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে তাকেই চুড়ান্ত করা হচ্ছে। আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়েছে তবুও অন্য প্রার্থীকে তালিকায় নাম রাখা হচ্ছে। ফরহাদ নামে নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদন করা চাকুরি প্রার্থী জানান আসলে এখানে নিয়োগ বানিজ্য হচ্ছে। আমি স্কুল কমিটির এক সদস্যদের সাথে কথা বলে জেনেছি নিরাপত্তা কর্মী পদের জন্য ১২ লাখ দর উঠেছে। এ্রকম যদি হয় তাহলে আমার পরীক্ষায় অংশ  নেয়া হবে না। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রমজান আলী এ বিষয়ে জানান আসলে কোন নিয়োগ বানিজ্য হয়নি। নিয়োগ পরীক্ষার আগে চুড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ফাঁস হয়েছে কিভাবে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি কমিটির সদস্যদের বলে দিয়েছি কোন প্রার্থীর সঙ্গে যাতে চাকুরি বিষয়ে লেনদেন না করা হয়। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নুরু মিঞা এবং সিরাজ জানান প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির সঙ্গে নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়ে আলোচনা করেন আমরা কিছুই জানিনা। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনির হোসেন জানান, এখানে কোন নিয়োগ বাণিজ্যের সুযোগ নেই। এখনো নিয়োগের তারিখ ঠিক হয়নি। মেধার ভিত্তিতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিন আকতার জানান, যদি নাম ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটে তাহলে আমি বিষয়টি দেখবো।  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন পঞ্চগড়ে | মাধ্যমিক | স্কুলে | নিয়োগ | বাণিজ্যের | অভিযোগ | উঠেছে