আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশীর মৃত্যু

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশীর মৃত্যু
পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় বিএসএফের গুলিতে নুর ইসলাম (৩৫) নামে এক বাংলাদেশী গরু ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত গরু ব্যবসায়ী বাড়ির বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের বকশীগঞ্জ এলাকায়। তিনি ওই এলাকার আব্দুর জব্বারের ছেলে। গেলো বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন মোমিনপাড়া সীমান্তের মেইন মিলার ৭৫২ এর ২ নম্বর সাব পিলার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়দের ধারণা রাতেই বিএসএফ ওই গরু ব্যবসায়ীর মরদেহ বাংলাদেশের ২০০ গজ অভ্যন্তরে এনে নজরুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির চা বাগানের পাশে ফেলে রেখে গেছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। এদিকে এ ঘটনায় নীলফামারী ৫৬ বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোমিন পাড়া সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। এসময় পতাকা বৈঠকে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আসাদুজ্জামান হাকিম সহ বিজিবি ও বিএসএফের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ, বিজিবি ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গেলো বুধবার রাতে উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিন পাড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন নুর ইসলাম সহ ৫ গরু ব্যবসায়ী। পরে রাতে গরু নিয়ে ফেরার পথে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ২১ ব্যাটালিয়নের বেরুবাড়ি ক্যাম্পের একটি টহল দল তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। এসময় নুর ইসলাম ওই গরু ব্যবসায়ীর বাম গালে গুলি লেগে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। স্থানীয়দের ধারণা রাতেই বিএসএফ ওই গরু ব্যবসায়ীর মরদেহ এনে বাংলাদেশের ২০০ গজ অভ্যন্তরে নজরুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তির চা বাগানের পাশে ফেলে রেখে গেছেন। পরে বৃহস্পতিবার সকালে চা বাগানের পাশে মরদেহটি দেখতে পেয়ে বিজিবি ও পুলিশকে জানায় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিন পাড়া এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হক বলেন, বুধবার রাতে বিকট শব্দে ৪/৫ বার গুলির আওয়াজ শুনতে পাই। তবে রাতে বের হবার সাহস পাইনি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে অনেকের কাছে শুনতে পাই নুর ইসলাম সহ ৫ জন ভারতে গরু আনতে গিয়েছিলেন। গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে। এছাড়া তাদের নিয়ে আসা একটি গরু নাকি ঘাগড়া ক্যাম্পে রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরহাল করি। নিহতের বাম গালে গুলির চিহ্ন রয়েছে। গুলিটি মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে গেছে। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে যে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। নীলফামারী ৫৬বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আসাদুজ্জামান হাকিম বলেন, বিএসএফ জানিয়েছে বাংলাদেশী কয়েকজন নাকি ভারতে প্রবেশ করে বিএসএফ সহ কয়েকজনকে মারধর করেছে। তবে কারা বাংলাদেশী এ ব্যাক্তিকে মেরেছে তারা জানেন না। তবে পতাকা বৈঠকে আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। সীমান্তের যে কোন বিষয়ে আমরা তৎপর ও কঠোর নজরদারী করি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বিএসএফের | গুলিতে | বাংলাদেশীর | মৃত্যু