সারা দেশের ন্যায় পাবনাতেও সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। ক্রয়ের ক্ষমতা নিম্ন মধ্যবিত্তের আয়ত্তের বাহিরে। বাজারে নেই স্বস্তি, সব সবজির দামই চড়া। যদিও গত দুই সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে বেড়েছে আলু, রসুন, পেঁয়াজ ও আদার দাম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পাবনার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
গেলো সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। গেলো সপ্তাহের তুলনায় বাজারে প্রায় সব সবজিই কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর প্রকারভেদে ১০০-১৮০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, শিম ২০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা এবং চাল কুমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বেশ কয়েকটি সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে কেজিতে ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়া করলা, কচুরমুখী ও বরবটি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কেজিপ্রতি ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া গোল বেগুন ১০০ টাকায় ও ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়া লম্বা বেগুন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম কমলেও গত সপ্তাহের তুলনায় ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা করে বেড়েছে। আলুর দাম বেড়েছে ৫ টাকা। আদা ও রসুনের দাম আগে থেকেই বাড়তি রয়েছে। কেজিতে দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা, দেশি আদা ২২০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, দেশি রসুন ২৬০ টাকা, আলু ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাশিনাথপুর বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আবুল হোসেন বাজার পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “বলার মতো কিছু নেই। কাকে বলবো? কী বলবো? শুধু এতটুকুই বলবো, আমাদের দেখার কেউ নেই।” রমজান নামের আরেক ক্রেতা বলেন, “আগে ১৫-২০ টাকা কেজিতে কেনা বেগুন আজ ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে! কবে আবার আগের দামে কিনতে পারব? সবকিছুর খরচ বেড়েছে, তাই উৎপাদন খরচও বেড়েছে। কিন্তু ১০০ টাকা কেজি তো হওয়ার কথা না।”
বাজার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রেতা আরিফ বলেন , “আমাকে ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতেই হচ্ছে ৬২ টাকায়। আনতে খরচ হয়, আবার নষ্ট বের হয়। তাই আমাকে ৭০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার শুনছি, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ বেড়েছে।”
বাজারে বেড়েছে বিভিন্ন মাছের দামও। ইলিশ মাছ ১৪০০-১৮০০ টাকা, রুই ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৫০০ টাকা, চিংড়ি ১০০০-২০০০ টাকা, কাঁচকি ৫০০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, কৈ মাছ ২৮০-৩০০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, শিং ৫০০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০-৭৫০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ কিনতে আসা মুজিব ইসলাম বলেন, “সবকিছুর দাম এমনিতেই বেশি। কিন্তু আমি ভাবতেও পারছি না চিংড়ি মাছের কেজি দুই হাজার টাকা। আমার ছেলেমেয়ে চিংড়ি মাছ খেতে পছন্দ করে। কিন্তু এ রকম দাম হলে কীভাবে খাওয়াবো?”
এদিকে, বাজারে কেজিতে ব্রয়লার মুরগি ১৬৬-১৭২ টাকা, কক ২৯০-৩০০, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দ্রব্যমূল্যের বাজারে মুদি দোকানের পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, চিনি ১৩৫ টাকা, মুসর ডাল ১২৫ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৭০ টাকা, বুটের ডাল ৮৫ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেটের আটা ১২০ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সরিষার তেল ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।