বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউ এইচ ও) তথ্য অনুসারে, ফুসফুসের ক্যানসারের পরেই পুরুষরা সবচেয়ে বেশি প্রস্টেট ক্যানসার বা মূত্রশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রাথমিক পর্যায়ে এ ক্যানসারের লক্ষণগুলি ধরা পড়ে না। যখন সমস্যা বড় আকার ধারণ করে ও রোগ নির্ণয় করা হয়, তখন রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়।
চিকিৎসকদের মতে, যে কোনও বয়সেই এ রোগ হতে পারে। তবে বয়স ৫০ পেরোলে ছেলেদের শরীরে এ অসুখের আশঙ্কা অনেকটা বেড়ে যায়। তাই ৫০ পেরোলেই ছেলেদের বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে।
সাধারণত ‘পিএসএ টেস্ট’ বা ‘প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট’-এর মাধ্যমে এ রোগ নির্ণয় করা হয়। সাধারণ ছেলেদের রক্তে ‘পিএসএ’-র মাত্রা ১ থেকে ৪-এর মধ্যেই থাকে। তবে রক্তে ‘পিএসএ’-র মাত্রা ৪-এর বেশি হলেই সতর্ক হোন। ‘পিএসএ’-র মাত্রা ৪ ছাড়ানো শরীরে ক্যানসার বাস বাঁধার লক্ষণ হতে পারে। তবে সব ক্ষেত্রে তা না-ও হতে পারে। বরং নিশ্চিত হতে ‘ডিজিটাল রেক্টাল টেস্ট’ রোগীদের করানো হয়। সব শেষে বায়োপসি করিয়ে ক্যানসারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এই রোগ প্রাথমিক পর্যায় ধরা পড়লে ৯৬ শতাংশ রোগীই প্রাণে বেঁচে যান। তাই শরীরে প্রস্টেট ক্যানসার বাসা বাঁধার প্রাথমিক উপসর্গগুলি আগে থেকেই জেনে রাখা ভাল। কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক থাকতে হবে-
প্রস্রাবের সমস্যা
বার বার প্রস্রাব পাওয়া প্রস্টেট ক্যানসারের অন্যতম উপসর্গ। বার বার বাথরুমে যাচ্ছেন, প্রস্রাব পেলেও ঠিকমতো না হওয়া, প্রস্রাবের সময়ে জ্বালাভাব, প্রস্রাব শুরু করতে ও বন্ধ করতে সমস্যা— হঠাৎই এ উপসর্গগুলি চোখে পড়লে সতর্ক হওয়া জরুরি।
প্রস্রাব ও বীর্যের সঙ্গে রক্তপাত
প্রস্রাব কিংবা বীর্যের সঙ্গে রক্তপাতকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় হেমাচুরিয়া। এ অসুখও মূত্রাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
হাড়ের যন্ত্রণা
কোমরের নীচের দিকে একাধিক কারণে ব্যথা হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, পিঠের নীচের দিক, কোমর, নিতম্ব, কুচকি ও থাইয়ের ব্যথা প্রস্টেট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। হাড়ে হাড়ে যন্ত্রণা কেবল বাতের লক্ষণ নয়, মূত্রাশয়ের ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
ওজন কমে যাওয়া
কোনও রকম ডায়েট শরীরচর্চা ছাড়াই যদি ওজন কমতে শুরু করে, তা হলেও সতর্ক হতে পারে। ওজন কমা প্রস্টেট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
যৌনতায় অনীহা
প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হলে যৌনতায় ভাটা পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত হলে লিঙ্গোত্থানে সমস্যা হয়। তাই এ প্রকার কোনও উপসর্গ শরীরে দেখা দিলেই সতর্ক হোন।
সূত্র: হেলথ লাইন