ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার (জিএসপি প্লাস)সুবিধা পেতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশকে শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে। শ্রম আইন সংশোধনে ব্যর্থ হলে তবে জিএসপি প্লাস বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে, বললেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
বুধবার(৪ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানের এক হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। যৌথভাবে ওই সেমিনারের অঅয়োজন করে ইইউ-ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তারের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সেমিনারের প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও বিশেষ অতিথি বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া।
বাংলাদেশ-ইইউ’র বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু বাণিজ্য-উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন,এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটবে, যা ইবিএ’র (অস্ত্র ছাড়া সব পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার) অধীনে বাংলাদেশ উপভোগ করত। পরবর্তী সুবিধা জিএসপি প্লাস পেতে হলে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে। কারণ শ্রম আইন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং কমিশনের জন্য এই বাণিজ্য ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশের আবেদন বিবেচনা করার জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান হবে।
চার্লস হোয়াইটলি বলেন, বাংলাদেশ ইইউর সঙ্গে শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে একমত পোষণ করেছে, যা জিএসপি প্লাস পাওয়ার প্রধান চালক হবে। আমরা শ্রম আইন সংশোধনের বিষয় নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছি। আশা করছি, একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মানদণ্ড মেনে ত্রিপক্ষীয় অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে আইনটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে। ব্যাংকিংসহ অন্য সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করছি। এক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছার কমতি নেই। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে কেউ ঠকবে না।
সেমিনারে ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগে ইউরোপীয় কোম্পানি চ্যালেঞ্জ’ ও ‘জিএসপি প্লাসের পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক দুটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীরা অংশ নেয়। প্যানেল আলোচনায় এয়ারবাসের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ মোরাদ বৌরোফেলা বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের ভুল ধারণা আছে। এটি দূর করতে উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে নজর দিতে হবে।
লাফার্জ হোলসিমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর ভ্যাট ও আয়কর নীতি পরিবর্তন হয়, যা বিনিয়োগকারীদের সঠিক বিনিয়োগ পরিকল্পনায় প্রধান বাধা। এছাড়া বিদ্যুৎ-জ্বালানির অপ্রতুলতাও রয়েছে।