২০০৮ সালে সরকার গঠন করেই আমরা প্রকল্পটি হাতে নেই। রাশিয়ার সহযোগিতায় আমরা সেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করেছি। পারমাণবিক শক্তি আমরা শান্তিরক্ষায় ব্যবহার করবো। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ছাড়াও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসিও এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করছি। আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ, পরীক্ষিত, রাশান ফেডারেশন এবং রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট এখানে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছেন। আমাদের সবাইকে সম্মানিত করেছেন।’ বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই পরীক্ষিত বন্ধুদেশকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশ আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ আমরা করতে পারছি।’
এ সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-রাশিয়ার বন্ধুত্ব অটুট থাকুক।
পুতিন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক গভীর এবং বহু পুরনো। সামনের দিনগুলোতে সম্পর্ক আরও উন্নয়ন হবে। রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরো লাইফটাইমে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতসহ সব সহায়তা দেবে রাশিয়া।
এর আগে, প্রকল্পের পরিচিতি তুলে ধরেন পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর। এরপর পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদন ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রথম ব্যাচের হস্তান্তর সম্পর্কিত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
এদিকে, জ্বালানি এলেও কেন্দ্রটি পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। জনগণের কাছে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছাবে ২০২৫ সালের শুরুতে।
দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই প্রকল্পের অন্যতম সুবিধাভোগী হবে উত্তরাঞ্চল। সার্বিকভাবে দেশের প্রথম পারমাণবিক কেন্দ্রটি মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ২ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করছে সরকার।
রূপপুর কেন্দ্রে এক হাজার ২০০ মোগাওয়াটের দুটি ইউনিট রয়েছে। প্রথম ইউনিটের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ইউনিটেরও কাজের ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে।
রূপপুরে অবস্থানরত সাংবাদিকদের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে প্রথম ইউনিট জ্বালানি স্থাপনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে। সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হলে ইউরেনিয়াম ফুয়েল স্থাপন করা হবে।
এ ছাড়া সেপ্টেম্বর মাসে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হবে। প্রথম ধাপে ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ২০২৫ সালের শুরুতে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে এই কেন্দ্র থেকে।