হাত ধোয়ার সামাজিক আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে এগিয়ে আসতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও গণমাধ্যমসহ দেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রতি আাহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস। এ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ আহ্বান জানান তিনি।
এবারের বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের প্রতিপাদ্য হলো—আপনার নাগালেই পরিচ্ছন্ন হাত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রামীণ ও পৌর জনপদে নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। গত ১৪ বছরের বেশি সময়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। স্কুলজীবন থেকেই যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানলাভ ও অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে সে জন্য ২০১২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ৩২ হাজার ৪২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬২ হাজার ওয়াশ ব্লক এবং প্রায় ৬২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানির উৎস ও ২২ হাজার ৫২৮টি ওয়াশ বেসিন নির্মাণ করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ অর্জনের লক্ষ্যে টেকসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও এর প্রয়োগ, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন, পরিবেশবান্ধব উন্নত টয়লেট নির্মাণ ও ব্যবহার এবং নিরাপদ স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
‘আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন সেবা নিশ্চিত করা’ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন এবং নিরাপদ পানির উৎসের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে, ২০০৩ সালে যা ছিল মাত্র ৩৩ শতাংশ। অপরদিকে খোলা স্থানে মলত্যাগকারীর হার ২০০৩ সালের ৪৪ শতাংশ থেকে প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশের এ সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। দেশের প্রায় সব জেলায় আধুনিক পানি পরীক্ষাগার স্থাপন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনাবিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ সব উদ্ভাবনী ও জনবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে যথাসময়ে এসডিজি অর্জন সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য মহামারি ও রোগব্যাধি থেকে সুরক্ষাসহ সব রোগব্যাধির বিস্তার রোধে সবচেয়ে সহজ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর উপায়গুলোর একটি হলো সাবান ও পানি দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া এবং নিরাপদ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো সঠিকভবে মেনে চলা। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণসহ জনগণের স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আশা করি সবার জন্য উন্নয়নের নীতিকে ধারণ করে স্যানিটেশন খাতের বিভিন্ন অংশীজনের সহযোগিতায় কাইঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ হবে।’