আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ধরলা শুকিয়ে পলি খুশিতে বোরা চাষী

ধরলা শুকিয়ে পলি খুশিতে বোরা চাষী

উত্তরের জেলার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ধরলা নদীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর বুকে চরাঞ্চলের চাষিরা প্রতি বছরই বোরো চাষাবাদ করে আসছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ধরলার চরে জেগে ওঠা পলিমাটিতে বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। 

চারিদিকে সবুজ ফসলেই ভরে গেছে ধরলার বুক। এ যেন এক সবুজের সমারোহ। অথচ মাত্র এক যুগ আগেও পানির প্রবাহ ও প্রাণের স্পন্দন ছিল ধরলা নদীতে। এই নদীর প্রবল স্রোতের কারণে আঁতকে উঠতো ধরলা পাড়ের হাজারও বাসিন্দা। এখন পানি না থাকায় ধরলা নদীতে ছোট বড় প্রায় দুই শতাধিক চরের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে উপজেলার জীব বৈচিত্র্যের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। 

ধরলায় পানি না থাকায় মানুষজন পায়ে হেঁটে কৃষক ধরলা বুকে জেগে ওঠা পলিমাটিতে বোরো চাষাবাদ করেছেন। 

শুধু ধরলা নয়, নদীটির সংলগ্ন বারোমাসিয়া, নীলকমলসহ আশে পাশের সকল নদ-নদীর বুকেও শতশত বিঘা জমিতে কৃষকরা গত ৭ থেকে ৮ বছর ধরে বোরো ধান ও ভুট্টার চাষাবাদ করে আসছেন। বছরে একবার ধরলার বুকে চাষাবাদ করে সাময়িক ভাবে কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসলেও নদীতে নাব্যতা সংকট দেখা দেওয়ায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা ডিঙ্গি নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহকারী জেলে পরিবার গুলো কঠিন দুশ্চিন্তায় পরেছেন। ধরলাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বোয়াল, কাতলা, রুই, টেংরা, কর্তি, ভেটকি, বৈরালীসহ নানান প্রজাতির মাছ শিকার করে তারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। পানি প্রবাহ না থাকায় এসব মাছের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা।      

ধরলা পাড়ের সোনাইকাজী এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সকিনা বেগমসহ অনেকেই জানান, এক সময় এই ধরলা নদীই আমাদের ঘর-বাড়ি, আবাদি জমি-জমাসহ সব কিছুই গিলে নিয়েছে। সেই ধরলা এখন শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই ধরলার আগ্রাসী রূপ দেখেছে। ধরলার তীব্র ভাঙনে অনেকেই নি:স্ব হয়েছেন। তারা প্রতি বছর ধরলার বুকে জেগে উঠা পলিমাটিতে ৩ থেকে ৪ বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদ করছেন। বোরোর বাম্পার ফলনের স্বপ্নও দেখছেন। প্রতি বছর বোরো চাষে লাভবান হলেও এবছর ডিজেলের লিটার ৮৩ থেকে ৮৫ টাকা ও ইউরিয়া সারের বস্তা ৯৫০ টাকা। শুধু ইউরিয়া নয় সব সারের দামও বেশি। ফলে উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা করছে বোরো চাষিরা। 

একই এলাকার কৃষক নুরজামাল জানান, ৬ থেকে ৭ বছর ধরে ধরলার বুকে বোরো চাষাবাদ করছি। প্রতি বছর বোরোর ভাল ফলন হয়। আশা করছি এবছরও ভাল ফলন হবে। তিনি আরও জানান, এবার আড়াই বিঘা বোরো চাষ করতে এবছর খরচটা অনেক বেশি হয়েছে। ধানের দাম ভাল না থাকলে ধান চাষিদের লোকসান গুনতে হবে।

 

এসআই/ 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ধরলা | শুকিয়ে | পলি | খুশিতে | বোরা | চাষী