এমআরটি পুলিশ কেবল স্টেশনের ভেতরে দায়িত্ব পালন করবে এবং প্রতি স্টেশনে ৯ জন করে সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। বললেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
শনিবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় আগারগাঁও স্টেশন পরিদর্শন শেষে মেট্রোরেলে করে উত্তরা উত্তর স্টেশনে যান ডিএমপি কমিশনার। সেখানে পৌঁছে গণমাধ্যমে ব্রিফ করেন তিনি।
হাবিবুর রহমান বলেন, মেট্রোরেলের স্টেশনসহ এর অভ্যন্তরে যেকোনো অপরাধের খবর পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর এজন্যই মেট্রোরেলে মানুষের যাতায়াত নিরাপদ করতে এমআরটি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ডিএমপি কমিশনার জানান, মেট্রোরেলের (মাস র্যাপিড ট্রানজিট-এমআরটি) আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরুর পর ৬টি স্টেশনে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে এমআরটি পুলিশ। রোববার (২২ অক্টোবর) আরও তিনটি স্টেশনের দায়িত্ব নেবেন তারা।
চলতি বছরের ২৪ মে মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষায়িত মেট্রোরেল পুলিশ গঠনের অনুমোদন দেয় সরকার। পুলিশের একজন উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) নেতৃত্বে ২৩১ জনবল নিয়ে চালু হয় এমআরটি পুলিশ।
এমআরটি পুলিশ গঠনের সময় ১ জন ডিআইজি, ১ জন পুলিশ সুপার (এসপি), ১ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৮ জন পুলিশ পরিদর্শক, ৬ জন উপপরিদর্শক (এসআই), ৪১ জন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), ৫ জন নায়েক, ১৬৩ জন কনস্টেবল, ২ জন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, উচ্চমান সহকারী ১ জন, ১ জন হিসাবরক্ষক ও ১ জন কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া মেট্রোরেল পুলিশ ১০টি মোটরসাইকেল, ৪টি পিকআপ ও ১টি জিপ বরাদ্দ পায়।
উত্তরার দিয়াবাড়ি মেট্রোরেলের ডিপোতে এমআরটি পুলিশের কার্যালয় ঠিক করা হয়েছে। তবে এমআরটি পুলিশের কার্যক্রম এখনো পুলিশ সদর দফতরে চলছে।
বিশেষায়িত এমআরটি পুলিশে আরও ২০০ জনবল যুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে একজন উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) নেতৃত্বে এমআরটি পুলিশে জনবল এখন ৪৩১ জন। এই জনবল দিয়ে শনিবার (২১ অক্টোবর) থেকে মেট্রোরেলের নিরাপত্তার পুরো দায়িত্ব পালন শুরু করছেন তারা।
আনসার সদস্যসহ ডিএমপির ৩৫০ সদস্য এতদিন এমআরটির সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করে আসছিল।
গত বছরের ৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকায় দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন। এরপর উত্তরা-আগারগাঁও মেট্রোরেলের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরই মধ্যে এই অংশের সব স্টেশন চালু হয়েছে। এখন মেট্রোরেল সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল করছে। আগামী ৪ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশে মেট্রোরেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ উদ্বোধন করেন। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।