দল ছাড়াই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন- এমন জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাচ্ছেন বিএনপির সহ-সভাপতি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম)।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তিনি জানান, ‘আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। রাজনীতি নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা এই মুহূর্তে করছি না। আমি রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখছি।’
আগামী নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত। বিএনপি নির্বাচনে গেলে আমি সেই নির্বাচনে অংশ নেবো।’
আপনি নতুন দল করছেন, নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে সরকারের মন্ত্রীরা দাবি করছেন- এ ব্যাপারে আপনার প্রতিক্রিয়া কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না। রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখছি, এর বেশিকিছু এখন বলবো না।’
৭৯ বছর বয়সী হাফিজ উদ্দিন আহমেদ দুই মাস আগে অসুস্থ হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আমি সিএমএইচে ছিলাম। এরপর একবার সিঙ্গাপুরে গিয়েছি চিকিৎসার জন্য। এখন শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। আবার চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাবো। ভিসার জন্য অ্যাপ্লাই করবো।’
স্বাধীনতাযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন ‘জেড’ ফোর্সে ছিলেন হাফিজ উদ্দিন। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য তিনি বীর বিক্রম খেতাব পান।
সামরিক বাহিনী থেকে অবসরের পর তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০১ সালে খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলে তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন। দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে আছেন তিনি। সরকারের দমননীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে কারাগারও যেতে হয়েছে তাকে।
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে একটি কর্মসূচিতে অংশ নেয়ায় ২০২০ সালে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছিল। পরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শওকত মাহমুদকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
মেজর হাফিজ উদ্দিন ফুটবলে ব্যাপক পরিচিত একটি নাম। তিনি জাতীয় ফুটবল দলের স্ট্রাইকার হিসেবে দীর্ঘদিন খেলেছেন। বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিংশ শতাব্দীতে আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা ফিফা তাকে অর্ডার অব মেরিট প্রদান করে।