আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

সিসিটিভির ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ

সিসিটিভির ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ
বিএনপি তাদের অভিযোগ করতেই পারে। তবে পুলিশ প্রমাণ ছাড়া তো কাউকে গ্রেপ্তার করছে না। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ কোর্টে দেখানো হয়েছে। বলেছেন রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রংপুর নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নেয়া নিরাপত্তা জোরদার কার্যক্রমে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে শাপলা চত্বর থেকে বিশেষ মহড়া ও অভিযান শুরু করে সংস্থাটি। এতে ২০টি গাড়ি, সাঁজোয়া ট্যাংক, রায়ট কাট সাইরেন বাজিয়ে নগরীর ১৬ কিলোমিটার এলাকা মহড়া দেয়। একইসঙ্গে বিভিন্ন পেট্রল পাম্পসহ স্থাপনাগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। মহড়ার আগে আরপিএমপি’র এই কর্মকর্তা বলেন, বিএনপি নিজেরাই প্রমাণ রাখছে যে কীভাবে তারা বাসে অগ্নিসংযোগ করছে। কীভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারছে, কীভাবে পুলিশ হত্যা করেছে। কীভাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এগুলোতো আপনাদের ফুটেজেও আছে। সিসিটিভির যেসব ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে, তাতে তো সব কিছুই দেখেছেন। তাছাড়া গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিচ্ছেন। আমরা রংপুরে ইতোমধ্যে নাশকতা প্রস্তুতির সময় অনেককেই হাতেনাতে গ্রেপ্তারও করেছি। আবু মারুফ আরও বলেন, গেলো ১৩ নভেম্বর একটি অটোরিকশাতে (থ্রি-হুইলার) নাশকতার পরিকল্পনার জিনিসপত্রসহ হাতেনাতে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পেট্রল বোমা ও লাঠিসোঁটাসহ অনেক কিছু উদ্ধার করা হয়েছে। এ ধরনের অসংখ্য ঘটনা আছে সারাদেশে। বিএনপির কথা হচ্ছে একেবারে নিজেদের ক্লিনফিট করার মত কথাবার্তা বলা। আর আমরা যেটা করি সেটা অবশ্যই আমাদেরকে কোর্টে সাবমিট করতে হয়। কোর্টকে বোঝাতে হয় এবং অবশ্যই এগুলো সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে। এ সময় তিনি জানান, গেলো ২৮ অক্টোবরের পর থেকে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) পর্যন্ত রংপুর মহানগর এলাকায় আটটি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় ৬৫ জনকে গ্রেপ্তার রয়েছে। এদিকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দেশের অন্যান্য জেলার মতো রংপুর মহানগরসহ পুরো জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সড়কে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের প্রতি বাড়ানো হয় নজরদারি। গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও স্থাপনাগুলোর আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে পুলিশ-র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল। বুধবার (১৫ নভেম্বর) ভোর ছয়টা থেকে সরকার বিরোধী বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা পঞ্চম দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। নিরুত্তাপ অবরোধে সকাল থেকেই রংপুর থেকে ট্রেন ও আন্তঃজেলার বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে যাত্রী সংকটে দূরপাল্লার বাস চলাচল করেনি। পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলারসহ হালকা যানবাহন চলাচল করছে। সকাল থেকে অফিস আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শহরের সব দোকানপাট স্বাভাবিকভাবে খুলেছে। মহাসড়কে‌ দূরপাল্লার বাস ছেড়ে না গেলেও নগরীতে অটোরিকশা, সিএনজি ও ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করছে পুলিশ। এদিকে সকালে নগরীতে অবরোধের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল করেছে মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। মিছিল শেষে সেখানে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা থেকে অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করাসহ দলের সকল আটক নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। মিছিলে মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম মিজু ও ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব আব্দুস সালাম নেতৃত্ব দেন। প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আজ বুধবার বিকেলে ২৬তম কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ওই ভাষণে তিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করবেন। বিটিভি ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচার হবে সিইসির ভাষণ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সিসিটিভির | ফুটেজ | দেখে | গ্রেপ্তার | করছে | পুলিশ