বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।শুধু তাই নয়,গত ২৮ অক্টোবর সরকারবিরোধী সমাবেশ আয়োজনের বিষয়ে বিরোধীদলের এক নেতার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।রাশিয়ার এমন অভিযোগ এখন টক অব দ্য কান্ট্রি।বিষয়টি নিয়ে দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পাড়ায়ও চলছে তোলপাড়। যদিও এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও বিএনপি।
বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তিধর দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক অনেকটা সাপে-নেউলের মতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ইস্যুতে তারা কখনও একমত হতে পারেনি।বাংলাদেশের আসছে জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতেও এই দুই দেশ ভিন্ন সুরে কথা বলছে।বুধবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বক্তব্য ওই সুরটাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
কী বক্তব্য ছিলো মারিয়া জাখারোভা? গত বুধবার মস্কোতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছেন, বিদেশি কারো সহায়তা ছাড়াই বাংলাদেশের বৈধ নির্বাচনের সক্ষমতা আছে বলে মনে করে রাশিয়া৷ তারপরও এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।এটি ভিয়েনা কনভেনশনের বিরোধী৷ মারিয়ার দাবি,অক্টোবরের শেষের দিকে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সরকারবিরোধী বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য বিরোধীদলীয় এক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ পিটার হাসের এই তৎপরতা ভিয়েনা কনভেনশন না মেনে সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চরম হস্তক্ষেপের শামিল।
তবে রাশিয়ার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।ওয়াশিংটন বলছে, মস্কো ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছে।এ ব্যাপারে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের প্রতিক্রিয়া পাঠিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।তাতে বলা হয়েছে,ইচ্ছাকৃতভাবে মারিয়া জাখারোভা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও পিটার হাসের বিভিন্ন বৈঠক বিষয়াদি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন।বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না,অগ্রাধিকার দেয় না কোনো রাজনৈতিক দলকে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক সময়ের বিবৃতি তুলে ধরে ওই প্রতিক্রিয়ায় আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, আমরাও তাই চাই। সেটি হচ্ছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, যা শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের ও বাংলাদেশের জনগণ উভয়ের লক্ষ্য হচ্ছে— শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
এদিকে, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বক্তব্য অস্বীকার করেছে বিএনপিও। দলটির দাবি, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।বিএনপি এই ভ্রান্ত তথ্য তথা অপব্যাখ্যার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে।
এক বিবৃতিতে দলটির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, পারস্পরিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও রাশিয়া দীর্ঘদিনের বন্ধু। তবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বিবৃতি গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশিদের অনুভূতিকে আঘাত করেছে।