আর্কাইভ থেকে জাতীয়

নিষেধাজ্ঞা ও ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যে বার্তা দিলো যুক্তরাষ্ট্র

নিষেধাজ্ঞা ও ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যে বার্তা দিলো যুক্তরাষ্ট্র
‘আমার কাছে আজ  নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা দেওয়ার মতো খবর নেই। আর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র এব্যাপারে খোলাখুলিভাবে আলোচনা করে না।’ স্থানীয় সময় বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে আসছে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে কিনা-এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার একথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে নির্বাচনসংক্রান্ত ভুয়া খবরের (ডিপ ফেক নিউজ) বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে ওই সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, ‘আমি জানি বাংলাদেশ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করছেন। ৭ই জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার কোনো নতুন খবর আছে কি? জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার  বলেন,‘আজ আর নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আমার হাতে নেই। আর নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে আমরা সেই বিষয়ে খোলাখুলি পর্যালোচনা করি না।এটি আমাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাস।’ ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে  বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে বিষ প্রয়োগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। এ বিষয়ে কোনো উত্তর না দিয়ে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এড়িয়ে যান। বিএনপিপন্থী বাংলাদেশি ওই  সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিলো-বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বেগম খালেদা জিয়া -একটি মিডিয়া রিপোর্ট আছে যে তিনি সরকারি হেফাজতে থাকাকালীন তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং খারাপ আচরণ করা হয়েছিল। এখন চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না।  তিনি পর্যাপ্ত চিকিৎসা করতে পারছেন না এবং মৃত্যুর দিন গুনছেন। জাতিসংঘ ইতিমধ্যে তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুরোধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের  কি একই অনুরোধ করার কোন পরিকল্পনা আছে? এর জবাব না দিয়ে অন্য সাংবাদিককে প্রশ্ন করার সুযোগ দেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী বাংলাদেশের  নির্বাচন প্রসঙ্গে ম্যাথিউ মিলারের কাছে প্রশ্ন করেন। আনসারীর প্রশ্নটি ছিল—‘সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বাংলাদেশ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে তারা বলছে— আসন্ন ডামি নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ভুয়া খবর, ভুয়া ভিডিওসহ পরিকল্পিত অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোন পদক্ষেপ নেবে কিনা বা এ বিষয়ে দপ্তরের অবস্থান কী? জবাবে ম্যাথিউ মিলার  বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশে নির্বাচন সম্পর্কিত প্রচারণায় ডিপ ফেক প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়ে উদ্বিগ্ন।কারণ এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে হেরফের ও প্রভাবিত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বিশ্বজুড়ে উদ্বেগজনক প্রবণতার অংশ।’ তার আরেকটি প্রশ্ন ছিলো-  বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য  বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছে ৬টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তথাকথিত নির্বাচনের আগে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা ব্যতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে শাসকগোষ্ঠী সমগ্র দেশকে কারাগারে বন্দী করে রাখায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ওই আহবান জানায় সংস্থাগুলো। অন্যদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও তার প্রতিমন্ত্রী দাবি করছেন, তারা  যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ করতে পারবেন। সরকার গঠনের পর নতুন সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করবে বলেও তিনি জানান।  এব্ষিয়ে  আপনার প্রতিক্রিয়া কি? এর জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বিরোধী দলের সদস্যদের গণগ্রেপ্তার ও কারাগারে নির্যাতনের খবরে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা সকল পক্ষকে সংযম প্রদর্শন এবং সহিংসতা এড়াতে আহ্বান জানাই। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে কাজ করার আহ্বান জানাই যাতে সবাই সহিংসতা বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই প্রাক-নির্বাচন এবং নির্বাচনী পরিবেশে অবাধে অংশগ্রহণ করতে পারে।  আমাদের বিশ্বাস যে একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের কণ্ঠস্বর স্বাধীনভাবে কথা বলে, সংলাপ ও আলোচনায় নিয়োজিত থাকে যা আজকের সমস্যাগুলি নিয়ে মতবিনিময় করে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন নিষেধাজ্ঞা | ও | ৭ | জানুয়ারির | নির্বাচন | নিয়ে | বার্তা | দিলো | যুক্তরাষ্ট্র