আর্কাইভ থেকে বিএনপি

যুক্তরাষ্ট্র ‘ম্যানেজ’ হয়ে যাওয়ার বক্তব্য ‘ডাহা মিথ্যা’ : রিজভী

যুক্তরাষ্ট্র ‘ম্যানেজ’ হয়ে যাওয়ার বক্তব্য ‘ডাহা মিথ্যা’ : রিজভী
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র ‘ম্যানেজ’ হয়ে যাওয়ার বক্তব্য ‘ডাহা মিথ্যা’ এবং এটি সরাসরি প্রত্যাখান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা এটিকে ‘ডিপ ফেক নিউজ’ বলে অভিহিত করেছে। মন্ত্রীরা কতখানি বেহায়া হলে পরে এহেন নির্ভেজাল মিথ্যাকথা বলতে পারে তা নজিরবিহীন। যুক্তরাষ্ট্র ম্যানেজ নয় বরং তারা গণহারে বিরোধীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, মন্ত্রীরা ৭ জানুয়ারি আরেকটি জালিয়াতির নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলকে নিষ্ঠুর দমনের পাশাপাশি দেশে-বিদেশ নির্লজ্জ মিথ্যাচারে নিজেদেরকে লিপ্ত রেখেছে। কারচুপি নির্বাচন কন্টকমুক্ত করতে মন্ত্রীরা দেশ-বিদেশে নিজেদের মানসম্মান খুইয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে সবাই জানে যে, হত্যা, নিপীড়ন নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধীদল নিশ্চিহ্ন করার ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডে সরকারের সুপ্রতিষ্ঠিত নীতি। তারা বিরোধীদলের উপর দোষ চাপাচ্ছেন। একটা ‘চিটিং’ নির্বাচন করতে নিজেরা নিজেদের হত্যা করছে এর দায় কি আপনার নয়! এই কারসাজির নির্বাচনকে ঘিরে প্রায় প্রতিদিন হত্যার শিকার হচ্ছেন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের কর্মীরা। তিনি বলেন, বিরোধীদল হীন একটি একদলীয় ডামি নির্বাচন মঞ্চস্থ করতে সরকার গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করছে। আওয়ামী লীগের পক্ষে দালালি এবং শেখ হাসিনাকে তুষ্ট করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে পুলিশসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিএনপি নেতা বলেন, সাধারণ মানুষ সরকারের উৎপীড়ন-দুঃশাসন-জুলুম-নিপীড়ন-বাজার সিন্ডিকেটের করাল থাবায় অশান্তিতে জীবনযাপন করছেন। তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে, আগামী প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা এদের মনের মধ্যে আসেনা। এরা শুধুই ব্যাক্তি স্বার্থে কাজ করছেন। কারন শেখ হাসিনার সরকারই শেষ সরকার নয়। আজ হোক-কাল হোক বিদায় তাদের অনিবার্য পরিণতি। তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীকে জেলে পুরে, ভিটেমাটি-ঘরবাড়ী-ছাড়া করে তাড়িয়ে পোড়ামাটি নীতির বাস্তবায়ন প্রকল্পে এই সকল প্রাতিষ্ঠানিক কর্তা ব্যাক্তিরা সহযোগিতা করছেন। গোটা দেশই এখন বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোর জন্য এক শ্বাশরুদ্ধকর কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। রিজভী বলেন, পুলিশসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশনসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এখন শেখ হাসিনার পুতুল মাত্র। একাত্তরের চেয়ে ভয়াবহ একটা সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রিয় মাতৃভূমি। এখানে দেশের ১৮ কোটি মানুষ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বের বিপক্ষে দাড়িয়ে এক অদ্ভুত কিম্ভুতকিমাকার নির্বাচনের আয়োজন চলছে। ভোটারদের কাছে আহ্বান জবরদস্তি করলেও ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। ভোট বর্জন করুন। তিনি বলেন, গত দেড় মাসের বেশী সময় ধরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ। নয়া পল্টনের ত্রিসীমায় যেতে পারেন না আমাদের নেতারা। বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের  কার্যালয়েও নজরদারী করছে শেখ হাসিনার দলদাস আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল গভীর রাতে পুলিশ গুলশানস্থ কার্যালয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে প্রবেশ বা তল্লাশি করতে গেলে অনুমতি নেয়ার নিয়ম রয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য সেখানে রাখা পুস্পস্তবকসহ আনুসঙ্গিক সবকিছু নিয়ে যায়। আবার হুমকীও দিয়েছে কেউ অফিসে গেলে গ্রেপ্তার করবে। বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে বাধার সৃষ্টি এবং মহান বিজয় দিবসের বিজয় র‌্যালী করার অনুমতি দিতেও তারা টালবাহানার মাধ্যমে তারা একাত্তরের হানাদার বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে। রিজভী বলেন, গেলো ২৮ ও ২৯ জুলাই ২০২৩ তারিখ হতে আজ পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে মোট গ্রেপ্তার ২৪৫৯৬ জন, মোট মামলা ১০১৬ টির অধিক। মোট আসাসি ৯০৯১৬ জন, মোট আহত ৯০৪৪ জনের অধিক নেতাকর্মী। মারা গেছেন ২১ জন । মোট ৭২ টি মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ ও প্রায় ১১৪১ জনের অধিক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন যুক্তরাষ্ট্র | ম্যানেজ | হয়ে | যাওয়ার | বক্তব্য | ডাহা | মিথ্যা | | রিজভী