আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

কে এই রনিল বিক্রমাসিংহে!

কে এই রনিল বিক্রমাসিংহে!

সঙ্কটকালে দেশটির হাল ধরতে প্রস্তুত যিনি। দেশটির জনগণের বিপুল আশা-ভরসা যিনি তার নিজ কাঁধে নিতে যাচ্ছেন। তিনি হলেন শ্রীলঙ্কার সদ্য শপথ নিতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।

কে এই রনিল? 

শ্রীলঙ্কার সাবেক সমসমাজপন্থী এসমন্ড ও নলীনি বিক্রমাসিংহে দম্পতির দ্বিতীয় পুত্র তিনি। রনীল ১৯৪৯ সালের ২৪ মার্চ শ্রীলঙ্কায় জন্মগ্রহণ করেন। 

কলম্বোর রয়্যাল কলেজে অধ্যয়ন করেন রনিল বিক্রমাসিংহে। সিলন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হন। স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর শ্রীলঙ্কা ল কলেজ থেকে আইন পরীক্ষায় অংশ নেন। ১৯৭২ সালে অ্যাডভোকেট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন রনিল।

গেল শতাব্দির সত্তরের দশকের মাঝামাঝিতে শ্রীলঙ্কার পুরোনো রাজনৈতিক দল ইউএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হন। 

১৯৭৭ সালে প্রথমবারের মতো দেশটির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রনিল বিক্রমাসিংহে। সেবার তিনি সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে যুব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। 

১৯৮৯ সালে প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসা রনিলকে শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। 

১৯৯৩ সালে প্রেসিডেন্ট প্রেমাদাসা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে প্রধানমন্ত্রী ডি বি উইজেতুঙ্গা প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। আর উইজেতুঙ্গার প্রধানমন্ত্রীর পদে স্থলাভিষিক্ত হন রনিল বিক্রমাসিংহে।  

১৯৯৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে গামিনী দিশানায়েক হত্যাকাণ্ডের পরবর্তীতে ওই বছরের  নভেম্বরে রনিলকে বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত করা হয়। 

২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা পুনরায় তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রন্টের সঙ্গে জোট করে সেবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়ে ১০৬ আসনে জয়ী হলেও সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। 

৩৫ আসন নিয়ে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি তার সঙ্গে সংসদে যোগ দিলে তিনি পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন।  কিন্তু ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। তার স্থলে তৎকালীন সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। মাহিন্দাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রনিল মেনে না নেয়ায় দেশটিতে সাংবিধানিক সঙ্কট দেখা দেয়।   

২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর সিরিসেনা পুনরায় তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিলে সেই সঙ্কট দূর হয়। 

২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ২০ নভেম্বর তিনি পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রী হন।  ২০২০ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি জয়ী হতে পারেননি। পরে দলের মনোনীত এমপি হিসেবে সংসদে যান এবং ২০২১ সালের ২৩ জুন তিনি শপথ নেন। 

শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সঙ্কটকে কেন্দ্র করে গণবিক্ষোভের মুখে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। এরপর থেকে গেল দুই দিন সঙ্কটপূর্ণ দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব কে নেবেন তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। 

শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার জানা গেল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির নেতা রনিল বিক্রমাসিংহে হচ্ছেন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী। আজ সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বলে তার দল জানিয়েছে।

তাসনিয়া রহমান

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কে | রনিল | বিক্রমাসিংহে