তথ্য-প্রযুক্তি

চ্যাটজিপিটি দিয়ে বই লিখে পুরস্কার জিতলেন ঔপন্যাসিক

চ্যাটজিপিটি দিয়ে বই লিখে পুরস্কার জিতলেন ঔপন্যাসিক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির সাহায্য নিয়ে শুধু যে উপন্যাস লিখেছেন তাইই নয় জিতে নিয়েছেন সাহিত্য পুরষ্কারও। এআই ব্যবহার করে জাপানের সবচেয়ে সম্মানজনক আকুতাগাওয়া সাহিত্য পুরস্কার জিতেছেন লেখিকা রি কুদান। চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে বই লেখার কথা অবশ্য স্বীকারও করেছেন ৩৩ বছর বয়সী এই লেখিকা। তিনি বলেন, ‘আমি আমার উপন্যাস লেখায় এআইয়ের ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। সেই সঙ্গে এর মাধ্যমে আমার সৃজনশীলতাকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করব।’ আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা  সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেরা উপন্যাসের জন্য এই নতুন লেখিকাকে গেলো বুধবার (২৪ জানুয়ারি) আকুতাগাওয়া পুরস্কার দেয়া হয়। এক সংবাদ সম্মেলনে লেখিকা বলেন, ‘দ্য টোকিও টাওয়ার অব সিম্প্যাথি’ নামের উপন্যাসের ৫ শতাংশ এআই ব্যবহার করে লেখা। পুরস্কার প্রদান কমিটির সদস্যরা বইয়ের ওই অংশকে ‘কার্যত ত্রুটিহীন’ বলে মত দিয়েছেন। এআইকে ভবিষ্যতের গগনচুম্বী অট্টালিকা ডিজাইন করতে বলেছিলেন একজন স্থপতি। এই গল্পকে উপজীব্য করেই চ্যাটবটটি উপন্যাসের ভিত্তি তৈরি করে দেয়। টোকিও শহরে বহুতলবিশিষ্ট আরামদায়ক কারাগার নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন স্থপতির উভয়সংকটকে কেন্দ্র করে এই উপন্যাসের গল্প এগিয়েছে। উপন্যাসর থিম একটি এআই। গল্পে আইন ভঙ্গকারীদের পুনর্বাসনের কথা বলা হয়েছে। কুদান বলেন, তিনি নিজের জীবনের যেসব সমস্যার কথা অন্য কাউকে বলতে পারেন না, সেগুলোর সমাধানে এআইয়ের পরামর্শ নেন। অবশ্য কুদানই প্রথম নন, যিনি সৃষ্টিশীল কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরি করেছেন। এই প্রযুক্তির বিকাশের মাধ্যমে অনেক সৃজনশীল মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন। এআই ব্যবহার করে ছবি তৈরি করার কারণেই গেলো বছর সনি ওয়ার্ল্ড ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড থেকে বার্লিনভিত্তিক ফটোগ্রাফার বরিস এলডাগসেনের পুরস্কার প্রত্যাহার করা হয়। এছাড়া চ্যাটজিপিটি প্রস্তুতকারক কোম্পানি ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে গেলো বছর মামলা করেন ‘গেম অব থ্রনস’–এর লেখক জর্জ আর আর মার্টিন, জোডি পিকাউল্ট ও জন গ্রিশাম। এআই মডেলটিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন করার অভিযোগে মামলা করেছে নিউইয়র্ক টাইমসের মতো সংবাদমাধ্যম। তবে এক্স (টুইটার) প্ল্যাটফর্মে জাপানি লেখক ও পুরস্কার কমিটির সদস্য কেচিরো হিরানো বলেন, এআই ব্যবহার করে রি কুদানের পুরস্কার জেতার ঘটনায় তিনি কোনো সমস্যা দেখছেন না। তিনি আরও বলেন, রি কুদানের উপন্যাসটিতে এআই ব্যবহার করার বিষয়টিকে ভুলভাবে নেয়া হচ্ছে। কেউ যদি পুরো বইটি পড়ে তাহলে দেখতে পারবে, এতে এআই ব্যবহার করার কথা উল্লেখ রয়েছে। এই প্রযুক্তি নিয়ে ভবিষ্যতে আরও সমস্যা হবে। তবে রি কুদানের বইয়ের ক্ষেত্রে এটি কোনো সমস্যা নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে সৃজনশীলভাবে এআই ব্যবহারে কুদানের কাজের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। আবার আরেক দল বলছে, যেসব লেখক এআই ব্যবহার না করে লেখেন তাদের জন্য এটি ‘অসম্মানজনক’।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন চ্যাটজিপিটি | দিয়ে | বই | লিখে | পুরস্কার | জিতলেন | ঔপন্যাসিক