জাতীয়

নির্বাচন নিয়ে অসন্তোষ, সহযোগিতা ও সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী

নির্বাচন নিয়ে অসন্তোষ, সহযোগিতা ও সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী
বাংলাদেশে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়নের বিষয়েও। তারপরও  এসব বিষয় দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। বরং ঢাকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর এবং দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে নতুন করে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তঃসহযোগিতা বাড়াতে কাজ করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই আগ্রহের কথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী  বাংলাদেশি সাংবাদিক দস্তগীর জাহাঙ্গীর। দস্তগীর জাহাঙ্গীরের প্রশ্নটি ছিল, ‘বাংলাদেশ ইস্যুতে আপনার শেষ প্রেসনোটে আমি দেখতে পেয়েছি যে- নিরাপত্তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। এই ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে আছে সন্ত্রাস মোকাবিলা, সীমান্ত নিরাপত্তা, সাইবার নিরাপত্তা, সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত না জানিয়ে বাংলাদেশে নতুন সরকারের সঙ্গে ব্যাপকক্ষেত্রে কিভাবে সেই কাজ করা সম্ভব?’ জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার  বলেন, ‘আমি বলব সারা বিশ্বে আমাদের এই ধরণের সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়নের বিষয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। তবে এর অর্থ এই নয় যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করার দায়িত্ব আমাদের নেই। উদ্বেগ প্রকাশ করার অর্থ এটাও নয় যে, আমরা বিশ্বাস করি যেখানে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করার সুযোগ থাকে  সেখানে আমাদের সহযোগিতা থাকবে না। এর আগে, গত মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংয়ে আরেক বাংলাদেশি সাংবাদিক ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী  নির্বাচন ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমন পীড়ন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ জানতে চান। ওইদিন মুশফিকুল ফজলের  প্রশ্নটি ছিলো-‘জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন অনতিবিলম্বে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ৭ জানুয়ারির কারচুপির নির্বাচনে নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে ক্ষমতাসীন সরকার বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ বিরোধী দলের ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে আটক করেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া খর্ব করার দায়ে কর্তৃত্ববাদী এ সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে? কেননা নির্বাচনের আগে আপনার ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। জবাবে মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘আপনি এর আগে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমাদের মূল্যায়ন শুনেছেন। এই নির্বাচনকে আমরা কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু মনে করি না। নির্বাচনের সময়ে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের বিষয়েও আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি।’ ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, ‘আমি দুটি বিষয় নিয়ে কথা বলব। প্রথমত, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের জন্য সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। দ্বিতীয়ত, বিরোধী দলের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেয়া এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন নির্বাচন | নিয়ে | অসন্তোষ | সহযোগিতা | ও | সম্পর্ক | উন্নয়নে | আগ্রহী