আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

তামাকপণ্যের প্রকৃত মূল্য কমবে, ব্যবহার বাড়বে দরিদ্র ও তরুণদের মধ্যে

তামাকপণ্যের প্রকৃত মূল্য কমবে, ব্যবহার বাড়বে দরিদ্র ও তরুণদের মধ্যে

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকবিরোধীদের কোনো দাবি আমলে নেওয়া হয়নি এবং এটি প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব তথ্য জানান তামাকবিরোধী সংগঠন ‘প্রগতির জন্য জ্ঞান- প্রজ্ঞা’ ও ‘অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স- আত্মা’।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্ন স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরামূল্য মাত্র এক টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট কার্যকর হলে এ স্তরে সিগারেটের দাম বাড়বে মাত্র ২.৫৬ শতাংশ, যা ১০ শতাংশ মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির তুলনায় খুবই সামান্য। ফলে এ স্তরের সিগারেটের প্রকৃত মূল্য ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে এবং তরুণ ও নিম্ন আয়ের জনগণের মধ্যে কম দামি সিগারেটের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বাড়বে।

এতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে সিগারেট বাজারের ৭৫ শতাংশই নিম্ন স্তরের দখলে, যার প্রধান ভোক্তা মূলত দরিদ্র ও তরুণ জনগোষ্ঠী। অন্যদিকে, সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখে কেবল খুচরামূল্য এক টাকা বাড়ানোর কারণে বর্ধিত মূল্যের একটা অংশ কোম্পানির পকেটে চলে যাবে। তবে, তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দাম বাড়ানো হলে সরকারের রাজস্ব আয় বহুগুণ বাড়বে এবং কম দামি সিগারেটের ব্যবহার কমবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যম স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৬৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৫ টাকা (৩.১৭ শতাংশ), উচ্চ স্তরে ১০২ টাকা থেকে ১১১ টাকা (৮.৮২ শতাংশ) এবং প্রিমিয়াম বা অতি উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার দাম ১৩৫ টাকা থেকে ১৪২ (৫.১৮ শতাংশ) টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির (১০ শতাংশ) তুলনায় দাম বৃদ্ধি কম হওয়ায় সব ব্র্যান্ডের সিগারেটের প্রকৃত মূল্য হ্রাস পাবে অর্থাৎ আরও সস্তা হয়ে পড়বে এবং জনগণ সিগারেট ব্যবহারে উৎসাহিত হবে। একই সঙ্গে তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব অনুযায়ী সম্পূরক শুল্ক সুনির্দিষ্ট আকারে আরোপ না করায় কর আহরণে জটিলতা বাড়বে এবং তামাক কোম্পানির কর ফাঁকিসহ নানাভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ অব্যাহত থাকবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক কোম্পানির করপোরেট করহার (৪৫ শতাংশ) এবং আয়ের ওপর বিদ্যমান সারচার্জ (২.৫ শতাংশ) বাড়ানো হয়নি। ফলে তামাক কোম্পানিগুলোর মুনাফা বৃদ্ধির সুযোগ অব্যাহত থাকবে।

 বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন (গ্যাটস্ ২০১৭) এবং তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতি বছর এক লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন (টোব্যাকো অ্যাটলাস, ২০১৯)। চূড়ান্ত বাজেটে তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে, দীর্ঘমেয়াদে চার লাখ ৪৫ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক এবং চার লাখ ৪৮ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন তামাকপণ্যের | প্রকৃত | মূল্য | কমবে | ব্যবহার | বাড়বে | দরিদ্র | ও | তরুণদের | মধ্যে