আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বিএম ডিপোর ভেতরে খাওয়া হতো সিগারেট

বিএম ডিপোর ভেতরে খাওয়া হতো সিগারেট

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বিএম ডিপোর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ফলে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পুরো দেশ এখনো অনেকটাই শোকাগ্রস্থ। প্রশাসনের তথ্য মতে এখন অবদি ৪৬ জন ব্যক্তি মারা গেছেন এই ভয়াবহ বিস্ফোরণে। অগ্নিকান্ডের ভয়াবহতা ছিলো এতটাই যে তা নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে। তবে এবার এই অগ্নিকান্ডের পেছনে জানা গেলো নতুন এক তথ্য। বিএম ডিপোর ভিতরে বিক্রি করা হতো মশার কয়েল, সিগারেটসহ বিভিন্ন জ্বলীয় বস্তু। খাওয়া হতো সিগারেট, মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে জ্বালানো হতো কয়েল। কেউ নিষেধ করলে, তার উপর চড়াও হতো কর্তৃপক্ষ। এসব অবহেলার কারণে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অভিযোগ শ্রমিকদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন লরি চালক ও শ্রমিক জানান, বিএম ডিপোর ভিতরে খাওয়া হতো সিগারেট। এমনকি মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে জ্বালানো হতো কয়েল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের স্ফুটনাঙ্ক পানির তুলনায় ৫০ ডিগ্রি বেশি। সে কারণে বেশি তাপমাত্রায় এটি বিপজ্জনক। তাই এই কেমিক্যাল সংরক্ষণ করতে হয় শীতল, শুষ্ক ও ভালোভাবে বাতাস চলাচল করে এরকম জায়গায়। বিশেষ করে ফ্লেমেবল কেমিক্যাল অর্থাৎ দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে রাখা বিপজ্জনক। অথচ বিএম ডিপোর ভিতরে বিক্রি করা হতো সিগারেট ও কয়েলসহ বিভিন্ন জ্বলীয় বস্তু। সিগারেট খেয়ে আগুনসহ তা ফেলা হতো যেখানে-সেখানে। কেউ বাঁধা দিলে তার উপর চড়াও হতো কর্তৃপক্ষের লোকজন।

এসব বিষয়ে জানতে স্মার্ট গ্রুপের সিনিয়র মার্চেন্ডাইজার আউয়াল হোসেন সৈকতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ডিপোর ভেতরে সিগারেট খাওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই।

এ বিষয়ে  তদন্ত কমিটি সদস্য ও সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্ঘটনা বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা পেলে তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গেলো শনিবার রাত ৯টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট একে একে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু ডিপোর কিছু কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণ ঘটে। এত পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠে এবং আগুনের তীব্রতা বাড়ে। পরে সেনাবাহিনীর একটি দলও ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। বিএম ডিপোর ভয়াবহ বিষ্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। এ ঘটনায় আহত হয়ে এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন শতাধিক মানুষ।

মির্জা রুমন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বিএম | ডিপোর | ভেতরে | খাওয়া | হতো | সিগারেট