এক যুগ আগে দায়ের করা নাশকতার একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মো. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
আপিলের শর্তে রোববার (১০ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে জামিনের এ আদেশ দেন।
এবিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম (ফিরোজ) গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৫ মার্চ ঢাকার মেট্রোপলিটন মাজিস্ট্রেট আদালতে মেজর হাফিজ আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারি আপিল দায়ের করি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এই মামলায় জামিন হওয়ায় মেজর হাফিজের কারামুক্তিতে বাধা নেই।
গেলো ৫ মার্চ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে আত্মসমর্পণ পূর্বক জামিন চেয়ে আবেদন করেন ২১ মাসের সাজা পাওয়া বিএনপি নেতা হাফিজ। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গুলশান থানার নাশকতার মামলায় গত ২৮ ডিসেম্বর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ আট জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী ।
রায়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং বিএনপির সাবেক নেতা মো. হানিফকে দণ্ডবিধির দুটি ধারায় মোট ২১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়; যা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
অপর পাঁচ আসামি এম এ আউয়াল খান, মো. রাসেল, মঈনুল ইসলাম, বাবুল হোসেন ওরফে বাবু ও আলমগীর বিশ্বাস ওরফে রাজুকে দণ্ডবিধির পৃথক দুই ধারায় মোট ৪২ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে; যা অনাদায়ে তাদের আরও এক মাসের কারাভোগ করতে হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেছিলেন, অভিযোগ সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার বাকি ১১ আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।
খালাস পাওয়া ১১ জন হলেন- এম এ কাউয়ুম, মো. দুলাল, তোফায়েল আহম্মেদ ওরফে লিটন, জাহাঙ্গীর শিকদার ওরফে বাবু, আরিফুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, সামসুল হক মিয়াজী, বিপ্লব, খুরশিদ আলম মমতাজ, মোশারফ হোসেন ও মাহাবুব।
পরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হন আলতাফ হোসেন । তবে মেজর হাফিজ হাঁটুর চিকিৎসার জন্য দিল্লিতে থাকায় এতদিন তিনি আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ৪ জুন সন্ধ্যায় গুলশান থানাধীন মহাখালী ওয়্যারলেস গেট পানির ট্যাংকের সামনে রাস্তার ওপর ‘অবৈধ সমাবেশ থেকে হামলা চালিয়ে পুলিশের কাজে বাধা দেন আসামিরা। তারা রাস্তার চলাচলরত গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেন।
২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল গুলশান থানার এসআই কামরুল হাসান তালুকদার আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামালায় আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। মামলার বিচার চলার সময় ১২ সাক্ষীর মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এই রায় দিয়েছিলেন আদালত।