গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২০ ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ঘাঘট নদের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙন-ঝুঁকিতে রয়েছে গাইবান্ধা শহররক্ষা বাঁধের প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ। এ বাঁধের বিভিন্ন অংশে ছোট বড় গর্ত ও মাটি ধসে খাদের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় যে কোন সময় বাঁধ ধ্বসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছেন।
গাইবান্ধা পৌর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, একাধিকবার যোগাযোগ করেও শহররক্ষা বাঁধের ক্ষতিগ্রস্থ এসব অংশ মেরামত করা হয়নি। পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কমিশনার মো. শেখ শাহিন মিয়া বলেন, বাধ ভেঙগে গেলে পুড়ো শহর পানিতে প্লাবিত হবে। এত করে জনজীবনে দূর্ভগ নেমে আসবে। আমরা বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেও তাদের কোন সহযোগিতা পাইনি।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিস্তা ২৮.৮১ সেন্টিমিটার ও করতোয়া ১৮.৯০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। মঙ্গলবার (২১ জুন) পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বাড়বে। তারপর থেকে পানি কমা শুরু হবে। আপাতত গাইবান্ধায় বড় বন্যা হবার সম্ভাবনা নেই। তিনি আরও বলেন, বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলো মেরামত করা হচ্ছে।
বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার এস এম ফয়েজ উদ্দিন। তিনি জানান, চার উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ৮০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তালিকা করে এসব চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট মজুতের পাশাপাশি ৪০০ শতাধিক তাঁবু, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, মেডিকেল টিম এবং বেশ কিছু নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।