জবি শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা (২৪) মৃত্যুর ঘটনায় জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মানকে আসামি করে কুমিল্লায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় আম্মানকে এক নম্বর আসামী করা হয়েছে। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গেলো শনিবার (১৬ মার্চ) রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মামলা দায়েরের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টায় অবন্তিকার মা মামলা করেছেন। মামলায় অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিক আম্মান (২৬) ও জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে (৪৮) আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে অবন্তিকার মা অভিযোগ করেন, সহপাঠী আম্মান তাকে যৌন নিপীড়নমূলক আচরণ ও মানসিক নিপীড়ন করলে সহকানী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের নিকট অভিযোগ দেন অবন্তিকা। কিন্তু সহকারী প্রক্টর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা না নিয়ে অবন্তিকাকে নিয়ে অশ্লিল গালমন্দ করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘এমনকি আমার মেয়ে হোস্টেল ছেড়ে ছাত্রীদের মেসে থাকা শুরু করলেও আসামি ক্ষান্ত হয়নি। বরং সে অন্য সহপাঠী লাকী আক্তার ও রাফিসহ আরও কয়েকজনের মাধ্যমে আমার মেয়ের চলাফেরাও নজর রেখে তাদের মাধ্যমেও মানসিক নিপীড়ন করে। এর ফলে অবন্তিকা ঢাকা থেকে বাড়ি চলে আসে।’
অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বলেন, সহকারী প্রক্টর (সদ্য সাবেক) দ্বীন ইসলাম অভিযুক্ত সহপাঠী আম্মানকে বলেছিল কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের ছাত্রদের দিয়ে কুমিল্লায় আমার মেয়েকে এমনভাবে নষ্টা মেয়ে হিসেবে প্রচার করবে যাতে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।
তিনি আরও বলেন, ৬-৭ বার নিজের অফিস কক্ষে ডেকে দ্বীন ইসলাম আমার মেয়েকে অপমান করেছে এবং মানসিক হয়রানি করেছে।
নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দিয়ে শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে অবন্তিকা তাদের কুমিল্লা নগরীর উত্তর বাগিচাগাঁওয়ের বাসায় সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। শনিবার বিকালে কুমিল্লা সরকারি কলেজ মাঠ এবং শহরতলীর নিজ বাড়ি শাসনগাছা মহাজনবাড়ি এলাকায় পৃথক নামাজে জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার নামাজে জানাজায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানান শ্রেণিপেশার শোকার্ত মানুষজন অংশ নেন।
এদিকে তার এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার দিনভর নগরীর উত্তর বাগিচাগাঁওয়ের ‘পিসি পার্ক অরণি’ নামের বাসায় উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।