পবিত্র রমজান মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা যখন পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে রোজা পালন করছেন, সে সময় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা-গোলার আঘাতে প্রাণ হারাচ্ছেন গাজা উপত্যকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রমজানের প্রথম ১০ দিন, অর্থাৎ ১১ মার্চ ভোর থেকে ২১ মার্চ সন্ধ্যা পর্যন্ত উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন মোট ৮৭৬ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৪২৮ জন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তাই নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। হতাহতদের মধ্যে কতজন বেসামরিক এবং কতজন হামাস যোদ্ধা- তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রমজানে দৈনিক হিসেবে গাজায় সবচেয়ে বেশি নিহত ও আহতের ঘটনা ঘটেছে গেলো ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার। এ দিন ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় মোট নিহত হয়েছেন ১৪৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৩০০ জন।
এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) দাবি, রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহে গাজার আল শিয়া হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ৯০ জন ‘সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। তবে রমজানের প্রথম ১০ দিনে হতাহত ফিলিস্তিনিদের যে পরিসংখ্যান উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশ করেছে, তাতে আল-শিফা অভিযানে নিহতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আইডিএফ বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) জানিয়েছে, রমজানের ১০ দিনে গাজায় অভিযান চালানোর সময় নিহত হয়েছেন ৩ ইসরায়েলি সেনা এবং আহত হয়েছেন আরও ২২ জন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গেলো ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন মোট ২৫১ জন ইসরায়েলি সেনা এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ৪৯৬ জন।
অন্যদিকে ইসরায়েলের সরকার জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধাদের হামলায় নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত উপত্যকায় নিহত হয়েছেন মোট ৩১ হাজার ৯৮৮ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ৭৪ হাজার ১৮৮ জন।
রমজান শেষ হতে এখনও বাকি আছে ১৯ দিন। মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই মাসে সংঘাত কমার কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না, বরং সামনের দিনগুলোতে হতাহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধির ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।
জিএমএম/