আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

সকল কারাগারে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর নির্দেশ

সকল কারাগারে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর নির্দেশ

প্রকৃত আসামি শনাক্ত করতে এবং বদলি সাজা খাটা রোধে দেশের সব থানা ও কারাগারে পর্যায়ক্রমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির প্রচলন করতে নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্টের ঘোষিত রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার (৫ জুলাই) আইনজীবীদের সইয়ের পর এ রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করা হয়।

ছয় পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি লিখেছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো.মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে সব থানায় আসামির হাতের আঙ্গুল ও তালুর ছাপ, চোখের মণি, বায়োমেট্রিক পদ্ধতির প্রচলন করা, গ্রেপ্তারের পর আসামির সম্পূর্ণ মুখের ছবি ধারণ ও কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষণ করা, এবং দেশের সব কারাগারে আঙ্গুল ও হাতের তালুর ছাপ, চোখের মণির সংরক্ষণের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ সিস্টেম চালু করতে বলা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

শিশির মনির জানান, ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের শাহজাদপুর গ্রামের আহসান উল্লাহর ছেলে মোদাচ্ছের আনছারীকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর মোদাচ্ছের তার নাম-ঠিকানা গোপন করে নিজেকে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আজগর আলী মোল্লা বাড়ি মসজিদ সড়ক এলাকার মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নামে পরিচয় দেন।

পরে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর মোদাচ্ছের জামিনে মুক্তি পান। এরপর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। মোদাচ্ছের জহির উদ্দিন নামেই আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন।

এর আগে, নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় করা মামলার প্রকৃত আসামি নোয়াখালীর বসুরহাটের মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নয় মর্মে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার প্রকৃত আসামি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মোদাচ্ছের আনছারী ওরফে মোহাদ্দেস।

এতে আরও বলা হয়, জহির উদ্দিনকে খিলগাঁও থানার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি হিসেবে চিহ্নিত করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি প্রকৃতপক্ষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি নন, প্রকৃত আসামি মোদাচ্ছের আনছারী।

এমতাবস্থায় করণীয় বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও রিট আবেদনকারী পক্ষের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা জানতে চান হাইকোর্ট। গেলো বছরের ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উভয়পক্ষকে ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়। ধার্য করা দিনে ওই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়।

হাইকোর্টের একই বেঞ্চ গেলো বছরের ১০ মার্চ ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার কার্যকারিতা স্থগিত করার আদেশ দেন।

এদিকে, পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৮ এপ্রিল জহির উদ্দিনসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এরপর ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর জহিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এমতাবস্থায় জহির উদ্দিন যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মূল আসামি মোদাচ্ছের আনছারীর ছবি ও শারীরিক বর্ণনাসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে জহির উদ্দিন তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট আবেদন করেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

এসি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সকল | কারাগারে | বায়োমেট্রিক | পদ্ধতি | চালুর | নির্দেশ