শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবিবর্ধনে।বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) মালদ্বীপ থেকে পালিয়ে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর ই-মেইলে পদত্যাগপত্র স্পিকারের কাছে পাঠান তিনি।
শুক্রবার স্পিকারের গণমাধ্যম বিভাগের বরাত দিয়ে শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিরর এ তথ্য জানিয়েছে।
বলা হয়েছে, আজই গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। আর দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে আজই অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে পারেন।
এ পরিস্থিতিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নিয়োগের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া এখন থেকে চালু হবে। এই সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রেসিডেন্ট ভোটের নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। সাধারণ নাগরিকদের সমর্থনে (পপুলার ভোট) নয়, সে দেশের পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটেই আগামী সাত দিনের মধ্যে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে।
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার ওয়াই অবেবর্ধনে শুক্রবার জানিয়েছেন, ২২৫ জন পার্লামেন্ট সদস্যের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটেরভিত্তিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, পলাতক গোতাবায়া রাজপাকসের ছেড়ে যাওয়া প্রেসিডেন্টের পদ দখলের লড়াইয়ে রয়েছেন মূলত তিনজন। তারা হলেন প্রধানমন্ত্রী তথা কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাসা ও প্রবীণ সাংবাদিক তথা পার্লামেন্ট সদস্য ডলাস অলহাপেরুমনা।
গেলো শনিবার গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসে মালদ্বীপ থেকে একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেন। দেশটিতে তার শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের পর তিনি মালদ্বীপ হয়ে এখানে পালিয়ে আসেন।
সিঙ্গাপুর সরকার বলেছে- গোতাবায়া রাজাপাকসেকে একটি ব্যক্তিগত সফরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। রাজাপাকসে থাকবেন নাকি অন্য গন্তব্যে যাবেন তা স্পষ্ট নয়।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করেননি এবং তাকে কোনো আশ্রয় দেয়া হয়নি। সিঙ্গাপুর সাধারণত রাজনৈতিক আশ্রয়ের অনুরোধ মঞ্জুর করে না। তা নিশ্চিত করে তিনি অবতরণ করেছেন।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও গণ-আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া মঙ্গলবার রাতে একটি সামরিক বিমানে মালদ্বীপে পালিয়ে যান।
কিন্তু গোতাবায়া মালদ্বীপে গেলে সে দেশে বসবাসরত শ্রীলঙ্কার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। তাঁকে মালদ্বীপে আশ্রয় না দেয়ার দাবি ওঠে।