আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই ফ্লোর প্রাইস: বিএসইসি চেয়ারম্যান

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই ফ্লোর প্রাইস: বিএসইসি চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছে। বললেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন—বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

আজ রোববার (৩১ জুলাই) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম আয়োজিত সিএমজেএফ টক উইথ বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএসইসি দর কমার ক্ষেত্রে ২ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার এবং ফ্লোর প্রাইস দিতে চায় না। কিন্তু সাধারন বিনিয়োগকারীদেরকে রক্ষা করার জন্য দিতে বাধ্য হই। কারণ আমাদের দেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি। উন্নত দেশে শিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এমনটি করা লাগে না।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, শুধু ইক্যুইটি (শেয়ার ও ইউনিট) দিয়ে জিডিপির তুলনায় বাজারের আকার ধরে রাখা এবং ২০ শতাংশের বেশি করা সম্ভব না। যেসব দেশে জিডিপির তুলনায় শেয়ারবাজারের আকার তুলনামূলক বড়, সেসব দেশে ডেবট (বন্ড) মার্কেট দিয়ে বড় হয়েছে। আমাদের দেশেও বন্ডের লেনদেন শুরু হলে বাজারের আকার বড় হয়ে যাবে। তখন লেনদেনের পরিমাণও অনেক বেড়ে যাবে।

কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বড় বিনিয়োগকারীরা সাপোর্ট দেবেন আশ্বাস দিয়েছিলেন। এরপরেও বাজারে পতনের কারণ হিসেবে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ওই সভার পরে বড় বিনিয়োগকারীরা কিনেছিল। তবে আমাদের দেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি। তারা এতো পরিমাণ বিক্রির চাপ দিচ্ছিলেন, যা বড়রা কুলিয়ে উঠতে পারেনি। এরমধ্যে আবার নানা ধরনের নেতিবাচক খবর বাজারে প্রভাব ফেলেছে।

তিনি বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিজেদেরকে পোর্টফোলিও ম্যানেজ করতে হয় না। যা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রফেশনাল লোকজন দিয়ে ম্যানেজ করা হয়। যার ফলে ভালো রিটার্ন পাওয়া যায়।
গত ২ বছরের বিশ্লেষণে ৮০-৯০% মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে ১০%-১২% লভ্যাংশ দিতে দেখেছি। এবছরও ভালো লভ্যাংশ দেবে বলে আশা করছি। তাই যারা বাজার সর্ম্পক্যে ভালো বুঝেন না, তারা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ সীমা কস্ট প্রাইসে গণনার বিষয় এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি করার জন্য বর্তমান গভর্নর সচিব থাকার সময় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু ওইসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নিচের কর্মকর্তাদের আপত্তির কারনে হয়নি। তবে এবার হয়ে যাবে। এটি বাস্তবায়নে আইন পরিবর্তনের পরিবর্তে অন্যকোনভাবে করার কাজ করা হচ্ছে।

রোড শোর সফলতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিদেশে টাকা আনতে যাই না। দেশকে ব্র্যান্ডিং করতে যাই। দেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতে যাই। এখন অনেকেই বাংলাদেশকে ভালোভাবে জানে। যে কারনে অনেকে আমাদের দেশে বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ করছেন।

ক্যাপিটাল ম্যার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে (সিএমএসএফ) অবন্টিত লভ্যাংশ না দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, যারা এখনো দেয়নি, তাদেরকে জরিমানাসহ আগামিতে দিতে হবে। এটা অনেকটা দৈনিক ভিত্তিতে সুদগণনার ন্যায় হবে। এলক্ষ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য কাজ করা হচ্ছে।

আয়ের থেকে শাস্তি কম প্রদানের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদেরকে অনেক পুরাতন অভিযোগ দেখতে হচ্ছে। যা ১০-১৫ বছর আগেরও আছে। তারপরেও আমরা বিগত ২ বছরে যে পরিমাণ শাস্তি প্রদান করেছি, তা এর আগের ১০ বছরেও করা হয়নি। এরমধ্যে আবার করোনায় সবার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার দিকটিও বিবেচনা করতে হচ্ছে।

অধ্যাপক শিবলী বলেন, ভালো কোম্পানি আনার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। তবে সবাই চায় ভালো অ্যাকাউন্টস জমা দিয়ে আসতে। এ কারনে অনেকে আসার জন্য অপেক্ষা করছে। হয়তো জুন ক্লোজিংয়ের হিসাবে কয়েকটি ভালো কোম্পানির আবেদন জমা পড়তে পারে। তবে আমরা যখন ভুয়া অ্যাকাউন্টস বুঝতে পারি, তখন সেসব আইপিও ফাইল বাতিল করে দেই।

অনেক ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে না চাওয়ার কারন হিসেবে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, এটি অনেকটা কোম্পানির পর্ষদের মানসিক সমস্যা। তারা ভাবে, কোম্পানি যেহেতু ভালো ব্যবসা করছে, সেহেতু শেয়ারবাজারে কেনো যাবো। এছাড়া কোম্পানির মালিকানা অন্যদের হাতে ছাড়তে চায় না। এছাড়া এজিএমে অপমানিত হতে হবে ভেবেও আসতে চায় না।

 

বিআ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বিনিয়োগকারীদের | স্বার্থেই | ফ্লোর | প্রাইস | বিএসইসি | চেয়ারম্যান