পঞ্চগড়ে সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে এক সমবায় কর্মকর্তাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন বোদা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম (৪১) ও চাকরিপ্রার্থী ললিত মোহন রায় (২৬)।
আজ মঙ্গলবার ( ১৭ আগস্ট ) রাতে তাদের কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পঞ্চগড় পুলিশ বিভাগ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল থেকে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জেলার বোদা উপজেলার চাকরি প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল। ভাইভা বোর্ডে বিকেলে ডাক পড়ে চাকরি প্রার্থী ললিত মোহন রায়ের। এসময় ভাইভা বোর্ডে. ললিত মোহন রায়ের লিখিত পরীক্ষার খাতায় লেখার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষায় হাতের লেখা যাচাই করা হয়। এতে তার হাতের লেখার অমিল পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের সন্দেহ হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় তিনি বসতভিটার অর্ধেক জমি বিক্রি করে একটি চক্রকে আট লাখ টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
এমনকি তিনি লিখিত পরীক্ষার দিন নিজে পরীক্ষা অংশ না নিয়ে অন্য ব্যক্তিকে দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। তবে তাঁর পরিবর্তে কে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, তা না জানলেও টাকা কাকে দিয়েছেন, তা নিয়োগ বোর্ডকে জানান। নিয়োগে বোর্ডের কাছে তিনি বোদা উপজেলা সমবায় অফিসার রফিকুল ইসলামকে তিন লাখ টাকা এবং রিয়াজুল ইসলাম নামে অপর এক ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার কথা জানান। চাকরী প্রার্থী ললিত মোহন রায়ের কথা শুনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বোদা উপজেলা সমবায় অফিসারা রফিকুল ইসলামকে ডাকা হয়। পরে ওই দুজনকেই পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশের হাতে সোপর্দ করে নিয়োগ বোর্ড।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই পঞ্চগড় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২ থেকে তিনজনকে আসামি করে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় মঙ্গলবার রাতে বোদা সমবায় অফিসার রফিকুল ইসলাম ও চাকরি প্রার্থী ললিত মোহন রায়কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তার কৃত বোদা উপজেলা সমবায় অফিসার রফিকুল ইসলামের বাড়ি পাশ^বর্তি ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার পূর্ব গোয়াল পাড়া এলাকায়। আর ললিত মোহন রায়ের বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের দক্ষিণ কালীবাড়ি এলাকায়। মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামি মো. রিয়াজুল ইসলাম (৩২)। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চণ্ডীপুর এলাকার বাসিন্দা ও ওই এলাকার এলিট সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার বলেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আটক করে রাখা দুজনকে মঙ্গলবার রাতে থানায় নিয়ে আসা হয়। তাদের মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।