স্বপ্ন ছিল অনেক কিন্তু সব স্বপ্ন ভেঙে খানখান হলো আবারও। দ্বিতীয় বারও বৈবাহিক সম্পর্কে সফল হলেন না দলজিৎ কৌর। দ্বিতীয় বার ডিভোর্সের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তাকে।
২০২৩ সালের জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিলেন অভিনেত্রী৷ লন্ডনের ব্যবসায়ী, কেনিয়াবাসী নিখিল প্যাটেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মুম্বাইয়ের টেলি অভিনেত্রীর। নিজের সন্তান, সৎ সন্তানদের নিয়ে এলাহি আয়োজনে বিয়ের অনুষ্ঠান সেরেছিলেন তারা।
দলজিতের এক ছেলে আছে তার আগের স্বামী শালিন ভানোটের সঙ্গে। তার বয়স ১৩। অন্যদিকে নিখিলের আগের পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে তার দু’টি মেয়ে। এক জনের বয়স ১৩৷ অন্যজন ৮ বছরের।
বিগ বস ১৩ খ্যাত দলজিৎ বিয়ের পর ছেলে জেডনকে নিয়ে কেনিয়া চলে যান। স্বামীর সঙ্গে ঘর করার শখ ছিল তার। কিন্তু বিয়ের এক বছরের মধ্যেই সব শেষ। দলজিৎ এবং নিখিলের সম্পর্কে ধরল চিড়।
সম্প্রতি দলজিৎ প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলেন। স্বামী নিখিল নাকি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিলেন বলেই এরকম সিদ্ধান্ত নিকতে বাধ্য হয়েছেন নায়িকা। এরপর নিখিল তাদের বিচ্ছেদ সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বক্তব্য দেন।
নিখিল লেখেন, ‘এই বছরের জানুয়ারিতে, দলজিৎ তার ছেলে জেডনের সঙ্গে কেনিয়া ছেড়ে ভারতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ফলে শেষ পর্যন্ত আমাদের বিচ্ছেদ ঘটে। আমরা দু’জনেই বুঝতে পেরেছিলাম যে আমাদের মেলানো মেশানো পরিবারের ভিত্তি ততটাও শক্তিশালী নয় যতটা আমরা আশা করেছিলাম।’
‘দলজিৎ কেনিয়ার জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিল না। ভারতে তার কাজ এবং জীবনকে মিস করছিল। এর ফলে জটিলতাগুলি ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।’ নিখিলের মতে, মেলানো মেশানো পরিবারের ধারণা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, বিশেষ করে সংস্কৃতির ভিন্নতাও যেখানে গুরুত্বপূর্ণ।
নিখিল জানান, ভারতে ফেরার দিন নিজের ছেলের স্কুলের কথা বলায় নিখিল বুঝতে পারেন যে দলজিৎ আর কেনিয়াতে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন না। কেবল নিজের জিনিসপত্র ফেরত নেয়ার জন্য কেনিয়া ফিরবেন বলে জানিয়েছিলেন। ওইদিনই তাদের সম্পর্কের শেষদিন বলে ধরে নিয়েছিলেন নিখিল।
দলজিৎ যে তার সম্পর্কে অভিযোগ এনেছিলেন, তা মিথ্যে বলে দাবি নিখিলের। শুধু তাই নয়, তিনি জানান, তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জন্য নিখিলের আশপাশের মানুষকে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। একপ্রকার হুঙ্কার ছেড়েই বলেন, দলজিৎ যেন এমন কাজকর্ম বন্ধ করেন।
অন্যদিকে প্রথম স্বামী শালিনের সঙ্গে এখন সম্পর্ক ভাল হলেও বিচ্ছেদের সময়ে তা ছিল না। তাদের বিয়ে নিয়ে একাধিক বিতর্ক হয়েছিল এক সময়ে। স্বামীর বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ এনেছিলেন দলজিৎ।
‘কূলবধূ’-তে কাজ করার সময়ে একে অপরের প্রেমে পড়েন শালিন এবং দলজিৎ। ২০০৯ সালে বিয়ে, জেডন তাঁদেরই ছেলে। কিন্তু ২০১৫ সালে তারা আলাদা হয়ে যান। শালিনের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ তোলেন নায়িকা। শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল দলজিতের।
দলজিৎ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘বিয়ের পরের দিন থেকেই সমস্যা শুরু হয়। শাশুড়ি আমার সঙ্গে কথা বন্ধ করে দেন। কারণ তার পছন্দের মতো উপহার দিতে পারেনি আমার পরিবার।’’
দলজিতের বাবার পক্ষে তিন মেয়ের ধুমধাম করে বিয়ে দেয়া সম্ভব ছিল না। শালিনের মতো স্বচ্ছল ছিল না তার পরিবার। কিন্তু সেসব নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে অসন্তোষ ছিল। তা ছাড়া একবার এক মহিলাকে নিয়ে প্রশ্ন করায় দলজিৎকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন শালিন। এমনও অভিযোগ রয়েছে।
দলজিতের অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন শালিন তাকে কোনওদিন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাননি। দলজিতের বাবা-মায়ের সামনে তাকে মারধর করতেন শালিন। একবার নাকি তার পায়ে এমন মেরেছিলেন যে অভিনেত্রী এক মাস বিছানা ছাড়তে পারেননি।
সংসার করতে চেয়ে বারবার দুঃখ কষ্টই পেতে হয়েছে দলজিৎকে। এখন কেবল একটিই সঙ্গী তার। প্রাণের চেয়েও প্রিয় ছেলে জেডন। দ্বিতীয় বার ব্যর্থ বিয়ের পর ফের কি কোনওদিন মনের মানুষকে পাবেন নায়িকা?
কেএস/